‘একটি কুঁড়ি দুটি পাতা’ ১৭ বাগিচায়

8

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি

বিক্ষিপ্তভাবে হলেও গত এক মাস ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে সজীবতা ফিরে এসেছে ফটিকছড়ি উপজেলার চা-বাগানগুলোতে। উপজেলার ১৭টি চা-বাগানে নতুন করে পাতা গজাতে শুরু করেছে। এর আগে নানা কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল এসব বাগানের চা-গাছ। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে এই সমস্যা কেটে গেছে। বৃষ্টি হওয়ায় চা-বাগানগুলোতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। বাগানের গাছে গাছে নতুন পাতা গজাতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ চা সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাগানগুলোতে পাতা তোলা বন্ধ থাকে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে সাধারণত বাগানগুলোতে পাতা তোলা শুরু হয়। এতদিন বৃষ্টির অভাবে পাতা সংগ্রহ করা যায়নি। তবে এখন বৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২১টি চা-বাগানের কারখানা চালু করা হয়েছে।
চা সংসদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৭টি চা-বাগানের মধ্যে ১৩টিতে চা-প্রক্রিয়াজাতকরণের কারখানা রয়েছে। দেশের মোট উৎপাদিত চায়ের ১০ শতাংশ উৎপাদন হয় এ উপজেলা থেকে। কারখানা সার্বক্ষণিক চালু রাখার জন্য প্রায় সব বাগানে নিজস্ব জেনারেটরও রয়েছে।
ফটিকছড়ি উপজেলার কয়েকটি চা-বাগানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সবুজ কচি পাতায় ভরে গেছে গাছগুলো। নতুন করে চায়ের কুঁড়ি গজানোয় খুশি চা-বাগানের শ্রমিকেরা। কয়েকটি বাগানে চা-গাছ থেকে তোলা হচ্ছে পাতা। আবার কিছু বাগানের চা-গাছগুলো রেখে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো থেকে কয়েকদিন পরে পাতা তোলা শুরু হবে।
উপজেলার কর্ণফুলী চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের শুরুতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চা-পাতা উৎপাদন অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল। তবে গত ১৮ এপ্রিল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় গাছে নতুন পাতা গজাতে শুরু করেছে। এবছর উপজেলায় চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’
উপজেলার রাঙ্গাপানি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক উৎপল বিশ্বাস বলেন, ‘খরা এবং কুয়াশায় প্রথম দিকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু এখন বৃষ্টি হওয়ায় মনে স্বস্তি ফিরেছে। মাটির আর্দ্রতা বাড়ায় সারও দেওয়া যাচ্ছে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে চা-গাছ। এতে ফলনও বাড়বে বলে আশা করি।’
কৈয়াছড়া চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত ২২ ফেব্রæয়ারি বৃষ্টিপাত শুরু হলে বাগানগুলো সজীবতা ফিরে পায়। এরপর ২৭ মার্চ বৃষ্টিপাতে বাগানের উন্নয়নের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। পরে চলতি মাসের শুরু থেকে ক্রমে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকায় চা-গাছে নতুন কুঁড়ির দেখা মিলে। এতদিন যে পরিমাণ বৃষ্টি ঝরেছিল তা চা-বাগানের অনুক‚লে থাকায় এবার উৎপাদনও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
চা-সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে চলতি মৌসুমে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।’