উচ্ছেদ অভিযানে ‘সিআইপি’র ‘পা ভাঙল চসিক কর্মীরা

8

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাকবিতন্ডার জের ধরে এক গাড়ি আমদানিকারকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার গাড়ি আমদানিকারক বেলায়েত হোসেন এ ঘটনার বিচার চেয়ে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বেলায়েত হোসেন নগরীর পাহাড়তলী থানার উত্তর সরাইপাড়ার পোর্ট কানেক্টিং সড়কে মেসার্স ওয়ালি কার কালেকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোটার্স অ্যান্ড ডিলারস-বারভিডার সাবেক নির্বাহী সদস্য। চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাশেমের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ। তবে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়নি।
জানা গেছে, বেলায়েত হোসেন নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ি ওঠানামার সুবিধার্থে একটি লোহার স্থাপনা তৈরি করেন। কিন্তু এই স্থাপনাটি সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের ওপর তৈরি বলে জানান চসিকের কর্মকর্তারা। গত ২৯ আগস্ট প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাশেমের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে লোহার স্থাপনাটি উচ্ছেদ করে ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০ হাজার টাকা জরিমানা করলে তা বেলায়েত তখনই পরিশোধ করেন। এর মধ্যেই বেলায়েতের সঙ্গে আবুল হাশেমের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।
বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, লোহার স্ট্র্যাকচারটি স্থায়ী কোনো কাঠামো ছিল না। গাড়ি ওঠানামার প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা হয়, এরপর আবার তা সরিয়ে রাখা হয়। এরপরও যখন ভ্রাম্যমাণ আদালত এটি উচ্ছেদ করতে আসলে আমি বিনয়ের সঙ্গে তাদেরকে বললাম প্রতিষ্ঠানটি আমার মালিকানাধীন জায়গায়। সামনের অংশও আমার মালিকানাধীন। আমার নিজের জায়গায় আমি র‌্যাম বসিয়েছি, এখানে ফুটপাতে চলাচলে তো কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে না।
এসময় তিনি নিজেকে সিআইপি পরিচয় দেন। এরপরও যদি অনুমোদনের প্রয়োজন হয় সময় দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু আবুল হাশেম তার কথাকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে পুরো ভবন সিলগালা করে দেবে বলে হুমকি দেন। এরপর তিনি নিজ প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করলে চসিক কর্মকর্তা তাকে বেয়াদব উল্লেখ নিরাপত্তা কর্মীদের বলেন- একে (বেলায়েত) এখান থেকে নিয়ে যাও। নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে সরিয়ে ভবনের নিচে ফেলে দেয়। এতে তার পায়ের গোড়ালিতে ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৩১ আগস্ট বেলায়েত হোসেন স্বশরীরে মেয়রের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তাকে ‘নির্যাতনের’ প্রমাণ দেখান বলে জানান।
মেয়র বরাবরে দেওয়া চিঠিতে বেলায়েত হোসেন চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। ন্যায়বিচার না পেলে তিনি আইনের দ্বারস্থ হবেন বলেও উল্লেখ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাশেমের দাবি, এটি একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। আমরা উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের সামনে র‌্যামটি যখন তুলে নিচ্ছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাজে বাধা দেন। নিজেকে বারভিডার মেম্বার, সিআইপি এসব পরিচয় দিয়ে খুবই বাজে আচরণ করেন। আমি তখন নিরাপত্তা কর্মীদের বলেছি, উনাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে। নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়ে যাবার সময় তিনি লোহার স্ট্র্যাকচারের ওপর পড়ে গিয়ে পায়ে ব্যথা পান।