আ. লীগ-বিএনপির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য নেই

25

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম বলেছেন, ‘বাইরে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি সরকারি দল আর বিরোধী দল, কিন্তু ভেতরে তারা এক। শেয়ার মার্কেট লুটের সময়, ব্যাংক লুটের সময় তারা একই দল। এক সময় ছিল হাওয়া ভবনের লুটপাট। এখন হচ্ছে ক্যাসিনো লুট। গুলশান ক্লাব আর চট্টগ্রাম ক্লাবের ভেতরে তারা এক, বাইরে শুধু সরকারি দল আর বিরোধী দল।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার দ্রুত বিচার ও শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি বাতিল এবং চলমান দুঃশাসন রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে এ গণসমাবেশ হয়েছে।
সমাবেশে বাম জোটের শীর্ষ নেতা শাহ আলম আওয়ামী লীগ-বিএনপি বাদ দিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহব্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এরশাদের পতন হয়েছে ৩০ বছর। এরপর তো আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে দেখেছেন। আর কত দেখবেন? আওয়ামী লীগকে হটিয়ে বিএনপিকে আনলে কি হবে ? একই তো হবে। আওয়ামী লীগের জায়গায় বিএনপি আসলে আর বিএনপির জায়গায় আওয়ামী লীগ আসলে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না। জনগণের মুক্তির জন্য গরীব-কৃষক-মেহনতি মানুষের দল বাম গণতান্ত্রিক জোটের পতাকাতলে আসতে হবে।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য আনছার আলী, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, বাসদ চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়কারী অপু দাশগুপ্ত, ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী জয়।
গণসংহতি আন্দোলন, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমির সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ নেতা শফিউদ্দিন কবির আবিদ। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বামজোটের নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম আরও বলেন, ‘ব্যাংক থেকে লক্ষ, কোটি টাকা লুট হচ্ছে। সেই টাকা কানাডা, লন্ডন, মালয়েশিয়ায় পাঠাচ্ছে সোনার ছেলেরা। এই টাকা কাদের টাকা? গরীব কৃষক-শ্রমিকের টাকা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ভোট আসলে আমরা কিন্তু সেই লুটেরাদের ভোট দিই।’
জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবকে ‘ষড়যন্ত্রের চোরাপথ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া উপর থেকে জাতীয় সরকার বসিয়ে দিলে কি হবে? ওয়ান-ইলেভেন আমরা দেখেছি, তারাই তো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া ষড়যন্ত্রের কোন চোরাপথে ক্ষমতায় যাওয়া বিশ্বাস করে না বাম গণতান্ত্রিক জোট। আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে বাদ দেওয়া ছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না। ষড়যন্ত্রের চোরাপথে মানুষের মুক্তি আসবে না।’