আসামিদের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলার বাদি

99

কর্ণফুলীর ইছানগরে ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর একটি মমালায় হাজিরা দিতে আদালতে যাওয়ার পথে শেখ মহিউদ্দিনকে (৪৮) প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট প্রদানের পর উচ্চ আদালত থেকে আসামিরা জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার পর তদন্ত শেষে পুলিশ সত্যতা পায়। এ কারণে কর্ণফুলী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম কিবরিয়া চলতি বছরের ২৯ মে আদালতে নন এফআইর প্রসিকিউশন দাখিল করেন। তাতে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আদালতে আবেদন করা হয়।
এদিকে মামলার বাদি মোহাম্মদ ফয়সল জানান, তিনি আসামিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরিবারের সকল সদস্য আসামিদের হুমকির মুখে ভয়ে ভয়ে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ৫ অক্টোবর ইছানগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপেক্সের পাশে শিশুরা খেলার সময় একটি বল নুরুল আলম নামে এক ব্যক্তি গায়ে পড়ে। এ নিয়ে শিশুদের মারধরের প্রতিবাদ করেন মহিউদ্দিন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে সালিশ বৈঠকে মাতব্বররা বিষয়টি সমাধানে মহিউদ্দিনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা জামানত দাবি করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ মহব্বত আলীর কাছ থেকে কোন জামানত চাওয়া হয়নি। এ কারণে জামানত প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে মহব্বত আলীর নেতৃত্বে ৭ অক্টোবর হত্যা করা হয় শেখ মহিউদ্দিনকে। হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মহব্বত আলীসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হলেও দুই দফা তদন্ত শেষে পুলিশ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করে।
মামলার বাদি জানান, মাতব্বরদের দাবি মোতাবেক জামানত না দেওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ মহব্বত আলী ও তার সঙ্গীরা রাস্তার উপর প্রকাশ্যে মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে ও জবাই করে ড্রেনে ফেলে দেয়।
ওই ঘটনায় মামলা দায়ের ও চার্জশিট প্রদানের পর অভিযুক্তরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে মহিউদ্দিনের ভাই ও পরিবারের সদস্যদের প্রতিনিয়ত রাস্তাঘাটে লাঞ্ছিত করছে। সবশেষ গত মার্চ মাসে বাদির একটি জমি দখল করে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে সাইনবোর্ড। মামলা তুলে না নিলে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকিও দেয় তারা। ওই ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আসামিদের অব্যাহত হুমকির মুখে নিরাপত্তা চেয়ে গত ১ অক্টোবর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। এছাড়া আসামি নুর উদ্দিন, সালাউদ্দিন, সাহাবুদ্দিন ও মোহাম্মদ আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
কর্ণফুলী থানার ওসি মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, হুমকি প্রদানের সত্যতা পাওয়ায় জিডির প্রেক্ষিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে নন এফআইআর প্রসিকিউশন প্রদান করা হয়। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। নন এফআইরের প্রেক্ষিতে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।