আশ্রয়শিবিরের পেছনে পাহাড়ে ছোড়া হচ্ছে আর্টিলারি ও মর্টার শেল নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আতঙ্ক

4

বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত এলকায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছিল বলে জানান স্থানীয়রা। তারা জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত গুলিবর্ষণের পাশাপাশি থেমে থেমে আর্টিলারি ও মর্টার শেল ছোড়া হয়েছে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি। তবে এই সময় পর্যন্ত আকাশে ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টার দেখা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ২৩ দিন রাখাইন রাজ্যের ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ, মর্টার শেল ও বোমা নিক্ষেপ
করে আসছিল মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী। গত রবিবার সকাল থেকে হঠাৎ গোলাগুলি থেমে যায়। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দিন গোলাগুলির কোন শব্দ আসেনি। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে পুনরায় গোলাগুলির শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এবং শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য জানান, বুধবার সকাল সোয়া আটটার দিকে আশ্রয়শিবিরের পেছনের পাহাড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পাহাড়ের চূড়ার বিজিপির চৌকি থেকে খ্য মং সেক পাহাড়ের দিকে থেমে থেমে ছোড়া হচ্ছে আর্টিলারি ও মর্টার শেল। তাতে পাহাড়ের পাদদেশে থাকা আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত।
আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা, ১৫ দিন পরপর তাদের ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) সদস্যরা আশ্রয়শিবিরে এসে এই সহায়তা দেন। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় একসঙ্গে সব রোহিঙ্গা ত্রাণসহায়তা নিতে পারছেন না।
এদিকে মিয়ানমারে সীমান্তের চাকঢালার নতুন ২ টিসহ ৬ সীমানা পিলার এলাকায় সকাল জুড়ে মটারশেল বিস্ফোরণের প্রচÐ শব্দে গ্রামবাসীসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুনভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানান সীমান্তে বসবাসরতরাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক। তবে বুধবার কোন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধ বিমান সীমান্তে দেখেননি কোন সীমান্তবাসী।
সূত্র আরো জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সিমান্ত পিলার যথাক্রমে ৩৮, ৩৯, ৪০ ও ৪১ এলাকার বিপরীতে মিয়ামানমার অভ্যন্তর থেকে ভেসে আসা তুমুল সংঘর্ষ এখনো অব্যাহত রয়েছে ওই দেশের সেনাবাহিনী ও আরকার আর্মির মাঝে। কিন্তু গত ৩ দু’দিন (৬, ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর) ধরে নতুন করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চাকঢালা, আমতলী ও জামছড়ি গ্রামের বিপরীতে মর্টারশেল ও গোলাগুলির বিকট আওয়াজে নতুন এ গ্রাম সমূহে নতুনভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবছার বলেন, তার আওতাভুক্ত চাকঢালা, জামছড়ি, আষারতলী, আমতলীর মাঠ এলাকার মানুষের মাঝে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দেয় গত ৩ দিন ধরে। কারণ এ সীমান্তে প্রতিদিন এ গোলাগুলির ও মর্টারশেলের আওয়াজ এলাকাবাসী শুনতে পাচ্ছে।