আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার তাগিদ

46

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানিসহ অপারেশনাল কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়্যারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।
সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতিমাসে চট্টগ্রাম বন্দর একটি সভা করে। এতে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা, সমস্যার বিষয় উঠে আসে। পূর্বের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা হয়। এবারের সভার মূল লক্ষ্য হলো, দেশের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে বন্দরের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করে তোলা। সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন উপ সচিব অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন। এতে অংশ নেন শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম চেম্বার, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, বিকডা, কাস্টম হাউস, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এর আগে গত সোমবার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সভাকক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীদের নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে তারা নানা ধরনের সমস্যার কথা তুলে ধরে সমাধানের প্রস্তাব দেন। সভায় বক্তারা বলেন, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রমের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে একসাথে অনেকগুলো সংস্থাকে কাজ করতে হয়। তাই একটি সংস্থাকে কোনো অজুহাতে আটকে রাখলে সবারই পণ্য খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বিলম্ব হয়। তাই রাজস্ব বোর্ডের দোহাই দিয়ে আইনের কথা বলে সময়ক্ষেপণ ব্যবসাবান্ধব হবে না। সভায় ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে এইচএস কোড নিয়ে সমস্যার কথা উঠে আসে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং শুরুর পর থেকে ২০২১ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড গড়েছে। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৪৪৮ টিইইউএস রপ্তানি, আমদানি ও খালি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। ২০২০ সালে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউ। শুধু কন্টেইনারেই নয়, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণও ২০২১ সালে সর্বোচ্চ। এ বছর কার্গো হ্যান্ডলিং হয় ১১ কোটি ৬৬ লাখ ১৯ হাজার ১৫৮ টন। এর আগে ২০২০ সালে এ পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার ৭২৪ টন। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২০ সালে ৩ হাজার ৭২৮টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করলেও ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ২০৯টি। আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রক্ষেপণে দেখা যাচ্ছে, ২০২৬ সাল নাগাদ এ বন্দরের মাধ্যমে কন্টেইনার পরিবহন হবে ৩৪ লাখ ৯ হাজার একক। ২০৪১ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৬৯ লাখে।