অস্থায়ী সরকার গঠন হয়েছিল বলেই আমরা বিশ্বের বুকে স্বীকৃতি পেয়েছি

3

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশ বা বাংলা নামক ভূখন্ডটি একটি সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ হিসেবে বিশ্বের বুকে সুপ্রাচীনকাল থেকে প্রতিষ্ঠিত ছিল। সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে হাজার বছরের চট্টগ্রাম দিয়ে বৈদেশিক বণিকেরা এই বাংলায় প্রবেশ করলেও একটি স্বাধীন ভূখন্ড, জাতি হিসেবে যে স্বাধীন সত্ত্বা সেটি কিন্তু কখনোই গড়ে উঠেনি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাঁর জন্ম হয়েছিল বলেই ‘বাংলাদেশ’ নামক এ ভূখন্ডের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিল। ১৯৪৭ থেকে শুরু করে তিনি ধীরে ধীরে ৭০’র নির্বাচন পর্যন্ত একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জাতিসত্ত্বা হিসেবে আমাদেরকে তৈরি করেছেন। জাতির পিতা নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেই তৎকালে পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৯৯ শতাংশ অর্থাৎ ১৬৭টি আসন লাভ করে। তখন ইয়াহিয়া খান ও ভুট্টু তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অনীহা প্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়েছিল বলেই আমরা বিশ্বের বুকে বিভিন্ন দেশ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছি। জাতির পিতাকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি করা হয়। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে যুদ্ধ করে একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীকে হারিয়ে দেওয়া এবং তার পেছনে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি ছিল। সপ্তম নৌ-বহর পর্যন্ত পাঠানো হয়েছিল বঙ্গোপসাগরে, স্বাধীনতা যুদ্ধকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য। কিন্তু স্বাধীনতাকামী, মুক্তিবাহিনী ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন অকাতরে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। এজন্য বিশ্বের বুকে ১৭ এপ্রিল গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গতকাল ১৭ এপ্রিল বুধবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনন্য ও অসাধারণ ভাষণে রাষ্ট্র পরিচালনায় চমৎকার, সুনির্দিষ্ট ও সুন্দরভাবে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আমাদের মধ্যে যে কোন বিষয় থেকে এত ভেদাভেদ রয়েছে, পার্থক্য রয়েছে, মতভেদ রয়েছে। সত্য যে কোন একটি ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে ফেলি। কিন্তু এর মধ্যেও আমাদের অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান যোগ্য নেতা হিসেবে প্রমাণ করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কলঙ্কজনক কালোরাতে খুনী মোস্তাকচক্রসহ যারা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে তাদের ঘৃণাসহ শাহাদতবরণকারী নিহত পরিবারের সদস্য, আত্মত্যাগকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ৩০ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২ লক্ষ মা-বোনকে এবং যারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার রাজীব হোসেনের সঞ্চালনায় ‘ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল, মহানগর ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ ও জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি। বিজ্ঞপ্তি