আনোয়ারা প্রতিনিধি
সাগরে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। গত মে মাসের ২০ তারিখ থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা আগামী জুলাই মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত বহাল থাকবে। এসময় সাগরে মাছ শিকার বন্ধ করতে তৎপর রয়েছে উপজেলা মৎস্য অফিস, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ। গত দুইদিন আগে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করায় নৌ-পুলিশের সদস্যরা দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও ১৬টি জালসহ ৭ জেলেকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে উপক‚লীয় মৎস্যজীবী পরিবারগুলোর। উপক‚লে অলস সময় পার করছেন জেলেরা। বেঁধে রাখা হয়েছে শত শত সারি সারি মাছ ধরার নৌকা। কেউ কেউ ছেঁড়া জাল মেরামত করছেন। আবার অনেকে মাছ ধরা বন্ধের ফাঁকে বানিয়ে নিচ্ছেন নতুন নৌকা। গত রবিবার আনোয়ারা উপক‚লের খুইল্যা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকায় গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়।
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাজারে মিলছেনা সামুদ্রিক মাছ। তবে বাজারে কোল্ডস্টোরের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামও অকাশচুম্বি। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আগে বড় বড় মাছ ধরার জাহাজগুলো সাগর থেকে মাছ শিকার করে কোল্ড স্টোরে সংরক্ষণ করে। পরে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় সেগুলো চড়া দামে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেক মৎস্যজীবী।
স্থানীয় মৎস্যজীবী জয়নাল আবেদীন বলেন, উপকূলীয় এলাকার নব্বই ভাগ মানুষ সাগরে মাছ শিকারের উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় মৎস্যজীবীরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। একমাস পরে ইলিশের মৌসুম। আগে থেকে জালের ফাঁড়গুলো ঠিক করতে না পারলে ইলিশের মৌসুমে মাছ ধরা সম্ভব হয়না।
বার আউলিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাছির উদ্দিন রাসেল বলেন, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নৌ-পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। কোথাও জাল বসানোর খবর পেলেই আমার অভিযান চালিয়ে জাল, নৌকাসহ জড়িতদের আটক করছি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কমকর্তা এম রাশিদুল হক বলেন, সাগরে মাছ শিকার বন্ধ করার জন্য আমরা টোটাল আনোয়ারায় ৩ হাজার ৬৯৪ জন জেলেকে ৩৮ কেজি করে চাল প্রদান করেছি। নিষেধাজ্ঞার এই ৬৫ দিনে সাগরে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।