অনলাইনে চা নিলামের তাগিদ

12

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের চা নিলাম ও চায়ের বিপণন কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে পূর্ণাঙ্গ অনলাইন চা নিলাম পদ্ধতি চালুর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে এটা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (টিটিএবি) এ বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম নিতে হবে এবং চা ক্রেতাদের অনলাইন নিলাম কার্যক্রমের সঙ্গে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে, বললেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। গতকাল রোববার নগরীর আগ্রাবাদে টিটিএবি চা নিলাম কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনলাইন টি অকশন সিস্টেম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, ক্রেতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে চা উৎপাদনকারী, ক্রেতা ও ব্রোকারদের অংশগ্রহণে টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
চা বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন চা নিলাম চালু হয়েছে। আমরা চাই বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত চা নিলাম পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গভাবে অনলাইন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হোক। এজন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে টিটিএবিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
সেমিনারে টিটিএবির সভাপতি ওমর হান্নান বলেন, পূর্ণাঙ্গরূপে অনলাইন চা নিলাম চালুর বিষয়ে উৎপাদনকারী, ক্রেতা ও ব্রোকারদের দক্ষ করে তোলার অংশ হিসেবে এই সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। টিটিএবি এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) মোহাম্মদ নূরুল্লাাহ নূরী অনলাইন চা নিলামের নানাবিধ সুবিধার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ চা বোর্ডের ইতিবাচক ভ‚মিকা ব্যাখ্যা করেন। সেমিনারে চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (বাণিজ্য) মুহাম্মদ মদহুল কবীর চৌধুরী, বিপণন কর্মকর্তা আহসান হাবিব, সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল বোরহান, টিটিএবির সাবেক সভাপতি শাহ মঈনুদ্দীন হাসান, চা উৎপাদনকারী, ব্রোকার ও ওয়্যার হাউস প্রতিনিধিসহ চা ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার করার দাবিতে চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দেশের ১৬৬টি বাগানে চা শ্রমিকদের আন্দোলন এখনও চলমান আছে। ২৫ টাকা মজুরি বাড়ানোর পর গত শনিবার বিকেলে আন্দোলন প্রত্যাহার করার কয়েক ঘণ্টা পরই ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, আন্দোলন চলমান থাকবে। আমিতো শ্রমিকদের বাইরে যেতে পারবো না। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখতে তখন আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রমিকরা না মানার কারণে আবার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছি। দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন চা শ্রমিকরা। এরপর তারা ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। গত শনিবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বাগান মালিক প্রতিনিধি ও চা শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে তাদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সন্ধ্যার পর তারা ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।