সীতাকুন্ডে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

57

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ বছরের এক শিশুসহ মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেলাল উদ্দিন নামে অপর এক মোটর সাইকেল আরোহী। গতকাল মঙ্গলবার পৃথক সময়ে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জোরামতল ও পৌরসদরস্থ বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ার দিঘুলিয়া এলাকার বকুল দত্তের ছেলে দীপক দত্ত (৩৯) ও সীতাকুন্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়ার কট্টা বাজার এলাকার মিন্টু কুমার নাথের মেয়ে জয়শ্রী নাথ (৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকাল পৌনে চারটার সময় মহাসড়কের জোরামতল এলাকা থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে দীপক দত্ত ও বেলাল মহাসড়ক দিয়ে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। এসময় ঢাকামুখী একটি পণ্যবাহী লরি মোটর সাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটর সাইকেল থেকে রাস্তার উপর ছিটকে পড়েন দীপক ও বেলাল। একই সময়ে একইমুখী আরেকটি দ্রুতগামী ট্রাক দীপক দত্তকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন বেলাল। দুর্ঘটনার পর আহত বেলালকে উদ্ধার করে ভাটিয়ারি বিএসবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
অপরদিকে বিকাল সাড়ে ৫ টায় মহাসড়কের পৌরসদরস্থ বাস স্টেশন এলাকায় রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় ঢাকামুখী একটি কন্টেইনারবাহী লরি জয়শ্রী নাথকে চাপা দেয়। এতে লরির চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। দুর্ঘটনার পর সীতাকুÐ থানার এসআই টিবলু কুমার মজুমদার নিহত শিশুটির লাশ উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক লরিটি আটক করেন।
কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আবু আব্দুল্লাহ জানান, সীতাকুÐে পৃথক দু’টি সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। বিকালে মহাসড়কের জোরামতল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি আহত একজনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত মোটর সাইকেল ও ট্রাকটি সরিয়ে ফাঁড়িতে এনে রাখা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুÐ অংশে অব্যাহত সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রী, চালক ও পথচারীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ওয়ান বাই ওয়ান সড়ক হওয়ায় মহাসড়কের পাশের চলাচলের রাস্তায় ব্যবসায়ীদের মালামাল রাখা ও অবৈধ দোকান গড়ে তোলার কারনে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অনেকে মনে করেন। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বেপরোয়া ও অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালানো, মাত্রাতিরিক্ত গতি ও ওভারটেকের প্রতিযোগিতা, চালকদের অবসাদগ্রস্ততা কিংবা মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো, যানবাহনের যান্ত্রিক ক্রটি এবং চালকদের অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও অনভিজ্ঞতা এবং ট্রফিক আইন না জানা ও যথাযথ অনুসরণ না এবং চলাচলে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করাই দুর্ঘটনাগুলোর অন্যতম কারণ। দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জোরালো ভূমিকা না রাখায় এবং জনসাধারণের সচেতনতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় গত এক মাসে সীতাকুন্ডে ১০ জন নিহত ও ৮০ জন যাত্রী, পথচারী নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।