নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের আটটি চট্টগ্রামের

197

উচ্চ আদালত কর্তৃক বাজার থেকে প্রত্যাহারের আদেশকৃত ৫২টি পণ্যের মধ্যে আটটি পণ্য চট্টগ্রামে উৎপাদিত হয়। চট্টগ্রামের কারখানা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডে প্রস্তুতকৃত এসব পণ্য দেশজুড়ে বিক্রি করা হয়। গতকাল পণ্যগুলো বাজার থেকে সরিয়ে নিতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আগামী তিনদিনের মধ্যেই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন পূর্বদেশকে বলেন, ‘বাজারে নিষিদ্ধ কিংবা নি¤œমানের কোনো পণ্য থাকতে পারবে না। আমাদের টিম বাজার মনিটরিংয়ে মাঠে আছে। নির্দেশনা দেয়া আছে নিষিদ্ধ পণ্য বাজারে পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পণ্যগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য আদালত থেকে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্বস্ব প্রতিষ্ঠান পণ্যগুলো প্রত্যাহার না করলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’
বিএসটিআই উপ-পরিচালক (মেট) মো. শওকত ওসমান পূর্বদেশকে বলেন, আমাদের পরীক্ষার পর পণ্যগুলোর মান নির্ধারণ হয়েছে। এরপর হাইকোর্ট পণ্যগুলো প্রত্যাহারে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরাও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে এসব পণ্য পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে দেশের যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তারমধ্যে চট্টগ্রামের আটটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পণ্য আছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডে বাজারজাত করা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো হলো- ফিরিঙ্গিবাজার মিষ্টিমেলা ফুড প্রোডাক্টের লাচ্ছা সেমাই, পাঁচলাইশের মধুবন ব্রেড এন্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডের লাচ্ছা সেমাই, জালালাবাদের মিঠাই সুইটস এন্ড বেকারির লাচ্ছা সেমাই, ষোলশহর আতুরার ডিপোর ওয়েল ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির লাচ্ছা সেমাই, চট্টগ্রামের এসএস কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পিওর হাটহাজারী ব্র্যান্ডের মরিচের গুড়া, সীতাকুÐের কেআর ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কিং ব্র্যান্ডের ময়দা, ঈদগাহ্ রুপসা ফুড প্রোডাক্টসের রুপসা ব্র্যান্ডের ফারমেন্টেড মিল্ক (দই) ও আছাদগঞ্জের ইমতিয়াজ ব্রেড এন্ড ফুড প্রোডাক্টসের মেহেদি ব্র্যান্ডের বিস্কুট।
জানা যায়, গত ১২ মে হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৫৩৫০/২০১৯ এর আদেশ বলে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর ধারা ৪০ অনুযায়ী ৫২টি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন আদালত। নিষিদ্ধ ৫২টি পণ্যের মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সরিষার তেল, ড্রিংকিং ওয়াটার, লাচ্ছা সেমাই, হলুদ গুড়া, আয়োডিনযুক্ত লবণ, মরিচ গুড়া, সফট ড্রিং পাউডার, কারি পাউডার, ঘি, ধনিয়া গুড়া, নুডলস, ময়দা, ফারমেন্টেড মিল্ক (দই), চানাচুর, বিস্কুট, সুজি, মধু ও চিপস জাতীয় পণ্য আছে। গতকাল নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ পণ্যগুলো প্রত্যাহার সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পরিবেশনকারী, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা এবং গ্রাহকগণকে উক্ত পণ্যসমূহ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, পরিবহন, সরবরাহ, ক্রয় ও বিক্রয় এবং ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হয়। একইসাথে সকল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে আগামী তিনদিনের মধ্যে বাজার থেকে নিষিদ্ধ পণ্যগুলো প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।