গত দুই মাসে চট্টগ্রাম বিভাগে চোরাচালান বিরোধী অভিযানে ২৩৮ কোটি টাকার চোরাই পণ্য আটক হয়েছে। পণ্য আটকের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাসহ আদালতে বিচারাধীন সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিরও তাগিদ দেয়া হয়। আর এ লক্ষ্যে মামলার দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল এবং আদালতে সাক্ষীদের হাজিরা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেয়া হয়। গত সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীর আদালতে ২২ শতাংশ বিচারকের শূন্যতা রয়েছে। এর ফলে মামলা পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অতিদ্রুত সময়ে আদালতে বিচারকশূন্যতা দূর করতে অনুরোধ করা হয়। গত জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে ৪১ হাজার ৪২৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।
এছাড়া চোরাচালান প্রতিরোধে স্থল ও নৌপথে সংশ্লিষ্ট সংস্থা জুন মাসে ৩১ হাজার ৬১১টি এবং জুলাই মাসে ৩২ হাজার ১৯৫টি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে জুন মাসে এক হাজার ৭৩টি মামলা ও জুলাই মাসে এক হাজার ২৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযানে জুন মাসে প্রায় ১৩৫ কোটি ও জুলাই মাসে প্রায় ১০৩ কোটি টাকার পণ্য আটক করা হয়। এছাড়া জুন মাসে ৭৮৫ জন এবং জুলাই মাসে ৯৩৮ জনকে আটক করা হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, জুন মাসে ৭ হাজার ৮০২টি চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬০ হাজার ৫৮২টি যানবাহনে এবং জুলাই মাসে ৭ হাজার ৭৩৬টি চেকপোস্টের মাধ্যমে ৬৬ হাজার ৮৮০টি যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। এবং জুন মাসে ৪৮২টি ও জুলাই মাসে ৫২২টি মামলা দায়ের করা হয়। তল্লাশিকালে জুন মাসে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা এবং জুলাই মাসে ৬১ কোটি টাকার পণ্য আটক করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে জুন মাসে ৬২২ জন ও জুলাই মাসে ৫৯৮ জনকে আটক করা হয়।
চোরাচালান প্রতিরোধ কার্যক্রমকে কার্যকর ও গতিশীল রাখার লক্ষ্যে আবাসিক এলাকা, ব্যবসাকেন্দ্র ও গুদামে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ জুন মাসে ৩ হাজার ৯৫৭টি ও জুলাই মাসে ৪ হাজার ৬৪টি অভিযান পরিচালনা করে। এতে জুন মাসে ১৮৭টি ও জুলাই মাসে ২৩২টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মাধ্যমে জুন মাসে ৯২ লাখ টাকা ও জুলাই মাসে প্রায় এক কোটি টাকার পণ্য আটক করা হয়। এ ঘটনায় জুন মাসে ২২২ জন এবং জুলাই মাসে ২৬৪ জনকে আটক করা হয়।
আর চোরাচালান বিরোধী অভিযানকে আরও কার্যকর করার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করা হয়। জুন ও জুলাই মাসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। জুন মাসে ৬০ হাজার দুইটি অভিযানে এক হাজার ৭৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে ১৪২ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য এবং এক হাজার ৬০৮ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এক হাজার ২৪৬টি মামলা রুজু করা হয়। জুলাই মাসে ৬০ হাজার ৮০৬টি অভিযানে এক হাজার ৯৮৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এতে প্রায় ১১৬ কোটি টাকার পণ্য ও এক হাজার ৮৩১ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে এক হাজার ৩৬৩টি মামলা রুজু করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার জেলা প্রশাসক, মামলা পরিচালনাকারী পিপিগণসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
