ফটিকছড়িতে আ.লীগ-ত্বরিকত সংঘাতের ঘটনায় তিন মামলা

29

ফটিকছড়ির দাঁতমারায় আওয়ামী লীগ ও ত্বরিকত ফেডারেশন নেতা-কর্মীদের আধিপত্য নিয়ে সৃষ্ট সংঘাতের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩টি পাল্টা-পাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। ১৫ দিন ধরে ত্বরিকত কর্মীদের দোকানে তালা লাগিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। ফের তাদের হামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ত্বরিকত নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, ফটিকছড়ির ভুজপুর থানাধীন দাঁতমারার হেঁয়াকো এলাকার আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে সদ্য ত্বরিকত ফেডারেশনে যোগদানকারী নেতা-কর্মীদের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ পূর্ব থেকে চলে আসছিল। গত ১৯ জুলাই স্থানীয় দাঁতমারা ইউপি কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি ও ত্বরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী কর্তৃক বন্যাগ্রস্থদের ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সদ্য ত্বরিকত ফেডারেশনে যোগদানকারী নুরুল ইসলাম বাবুল, মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন ও নুরুল আবছারের নেতৃত্বে এমপিকে পুস্পমাল্য প্রদান করায় সংক্ষুব্দ হয়ে উঠে ওই সভায় সভাপতিত্বকারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুল হক মজুমদার, প্রকাশ- মজু কোম্পানীসহ অনুসারীরা। এমপি ত্রাণ দিয়ে প্রস্থানের মুহুর্তেই ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজু কোম্পানির নেতৃত্বে তার ছেলে, ভাতিজা এবং শ্যালকসহ ৬/৭ জন নেতা-কর্মী স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ের সম্মূখে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সামনেই ত্বরিকত কর্মী জামালের উপর প্রকাশ্য হামলে পড়েছিল, পরে বিষয়টি স্থানীয় এমপি জানলে ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বসে সুরাহার নির্দেশ দেন। ততক্ষণে হামলাকারীরা হেঁয়াকো বাজারে পৌঁছে এ ত্বরিকত কর্মী জামালের দোকানে হামলা দিয়ে ভাংচুর চালায়। এ বিষয়ে ত্বরিকত কর্মী জামালসহ অন্য ভূজপুর থানায় অভিযোগ দিয়ে রাত সাড়ে ৮টায় স্থানীয় হেঁয়াকো বাজারে ফিরলেই হামলাকারীরা ফের ত্বরিকত কর্মী আবছারকে মারধর শুরু করে। এসময় তাকে বাঁচাতে অন্যান্যরা এগোলে রাতে আওয়ামী লীগ-ত্বরিকত সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্ততঃ ৭-৮ নেতা-কর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় প্রথম হামলার শিকার ত্বরিকত কর্মী জামাল কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগটি ২০ জুলাই এফআইআর (ভূজপুর থানার মামলা নং-১২) হিসেবে গন্য হলেও দ্বিতীয় ঘটনায় (কুপিয়ে রক্তাক্তকরণ) আশংকাজনক জামাল এখনো কোন মামলা করতে পারেনি। উপরন্তু তাকেই আসামি করে গত ২১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতির উপর হামলার দায়ে মামলা হয়েছে (ভূজপুর থানার মামলা নং-১৪)। উপায়হীন হয়ে হামলার শিকার অপর ত্বরিকত কর্মী নুরুল ইসলাম বাবুল চট্টগ্রাম সিজেএম কোর্টে সিআর মামলা নং- ১০১/২০১৯ দায়ের করলে আদালত তা এফআইআর হিসেবে গন্য করতে ভূজপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। গত শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি মজু কোম্পানীর অনুসারীরা হেঁয়াকো বাজারের ব্যবসায়ী আবু কাউছারের বিকাশ দোকান, মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন ও রবিউল হোসেন মিলনের পাইকারী পান দোকান, নুরুল আমিনের টেইলার্স দোকানে তালা লাগিয়ে রাখায় গত ২১ জুলাই থেকে ১৫ দিন যাবৎ দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না, বরং তারা নির্বিকার।