২১ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্যতম গ্রেনেট হামলা বিচারকার্য দ্রুত সম্পন্ন করা হোক

14

আজ ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলা দিবস। আজ হতে ১৮ বছর পূর্বে ২০০৪ সালের এদিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত ভয়াবহ গ্রেনেট হামলা করা হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিল এ হামলার প্রধান টার্গেট। ‘রাখে আল্লাহ মারে কে?’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান, কিন্তু জঘন্যতম এ গ্রেনেট হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানও ছিলেন। উক্ত ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মী, সাংবাদিক এবং কয়েকশ সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে সমাবেশে জড়ো হওয়া নিরস্ত্র মানুষের উপর এমন ভাবে গ্রেনেড হামলা খুবই ন্যক্কারজনক। গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক অধিকারের উপর উক্ত গ্রেনেট হামলা ফ্যাসীবাদী চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। যার নিন্দাকর ভাষা আমাদের জানা নেই। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রোববার সেই রক্ত ভয়াবহ বিভীষিকাময় বর্বরোচিত ও বীভৎস হত্যাযজ্ঞের বেদনাময় দিন বাঙালি কখনো ভুলবে না। ২১ আগস্টের গ্রেনেট হামলার মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। জাতি গ্রেনেট হামলার সাথে জড়িতদের সুষ্ঠুবিচারের জন্য মুখিয়ে আছে। হামলার সাথে জড়িত নরঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আশা করে সমগ্র জাতি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার মানসে গণতন্ত্রের অশুভ শক্তি কর্তৃক পরিচালিত ২১ আগস্টের গ্রেনেট হামলার ন্যক্কারজনক ঘটনা দেশের কোন গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক সংগঠনের উপর যেন আর কোন অপশক্তি সাহস না করে এমন একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এদেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রত্যাশা।
দলীয়ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলা উপলক্ষে ১৮তম বর্ষপূর্তির এ দিনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিকে অনুসরণ করে সারাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করবে। এতে রয়েছে গ্রেনেট হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদিতে পুষ্পমাল্য প্রদান, আলোচনা সভা, খতমে কোরআন, দোয়া মাহফিল এবং উক্ত ঘটনায় শহীদদের মাগফিরাত কামনা। ইতোপূর্বে দীর্ঘদিনের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারের রায় ঘোষণা করেন। উক্ত রায়ে ঘটনার সাথে জড়িত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবরসহ ১৯ জন অপরাধীকে দ্রæত বিচার আদালত মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও অপর ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড প্রদান করেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি উচ্চতর আদালতের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। আমরা আশা করি সরকার ২১ আগস্টের গ্রেনেট হামলার প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় এনে ইতিহাসের এই জঘন্যতম গ্রেনেট হামলার বিচার কার্য সম্পন্ন করবেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন হত্যাকাণ্ড সমর্থনযোগ্য নয়। একটি গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেট হামলা করে কোন সংগঠনকে নেতৃত্ব শূন্য করার ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেন আর কোন দিন না ঘটে এ লক্ষে ২১ আগস্টের গ্রেনেট হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন। তবে সরকার পক্ষকে এও মাথায় রাখতে হবে যে, কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিষদাঁত ভেঙে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি আশা করি।