হালদা দূষণ রোধে ইউএনও’র অভিযান

61

পরিবেশে ওপর বিরূপ প্রভাব ও মানবদেহের জন্য হুমকি, আশঙ্কায় সরকার বিগত ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন উৎপাদন, বিপণন, বন্টন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবুও নিয়ম-কানুনকে তোয়াক্কা না করে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেশ কয়েক বছর ধরে দেদারসে পরিবেশর ক্ষতিকারক পলিথিন উৎপাদন করে যাচ্ছিল হাটহাজারী উপজেলাধীন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ফতেয়াবাদ রেলস্টেশনের পশ্চিমে কমিশনার রোডস্থ সফর আলী হাজির বাড়িতে সাবেক জাফর কাউন্সিলের এর ঘাটার বিপরীতে মের্সাস রহিম পলি মাট নামে একটি নিষিদ্ধ অবৈধ প্রতিষ্ঠান। তবে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২২ আগস্ট এ নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরীর কারখানার সন্ধান পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন। এ সময় কারখানাটিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন ও ৩০০ কেজি পলিথিনের উপকরণ জব্দ করে। তবে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্বদারকারী ইউএনও অবৈধ কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)এর ৬ক ধারায় বলা আছে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন সম্পর্ণ নিষিদ্ধ। এ আইন কেউ অমান্য করলে নুন্যতম ২ বছর অনাধিক ১০ বছর কারাদন্ড এবং অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। তবুও উক্ত এলাকায় মাসুম বিল্লাহ নামে জনৈক এক ব্যাক্তি তার কারখানায় পরিবেশের ক্ষতিকার পলিথিন উৎপাদন ও বিপণন করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান, গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ওই পলিথিনের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। এছাড়া প্রায় ৩০০ কেজি পলিথিন তৈরির কাঁচামাল (উপকরণ) জব্দ করে তা ধ্বংস (পুড়ানো) করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখে কারখানার দেয়াল টপকে কর্মরত সকলে পালিয়ে আতœগোপনে চলে যায়। তবে তাৎক্ষনিক কারখানাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হালদা দূষণ রোধে এ অভিযান এমনটা দাবী করে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, অবৈধ পলিথিন কারখানাটি পরিবেশ দূষণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত। হালাদার উন্নয়নে কাজ করতে গিয়ে পলিথিন বিড়ম্বনায় অনেক পড়তে হয়েছে। নদীর আনাচে-কানাচে, পানিতে এসব পলিথিন ভেসে বেড়াতো। ফলে দেশের একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর পানি দূষিত হয়ে মারাত্নক ক্ষতির সম্মুখীন হতো। বাঁধাগ্রস্ত হতো মাছের স্বাভাবিক প্রজনন। তাই পরিবেশ রক্ষা তথা হালাদাকে বাঁচাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।