সাবেক রাষ্ট্রদূত কে এম শেহাবুদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকীতে সভা ও দোয়া মাহফিল

5

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রথম আনুগত্য প্রকাশকারী ক‚টনীতিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত কে এম শেহাবুদ্দীনের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চন্দনাইশ ভাষাসৈনিক আবুল কালাম আজাদ এডুকেশন সোসাইটি গ্রন্থাগারের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এডুকেশন সোসাইটির সভাপতি শাহজাহান আজাদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ ও লোকসাহিত্য গবেষক শামসুল আরেফীন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম পিসপার্ক প্রপার্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর। সংগঠক জুবায়ের আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাংবাদিক সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল, চসিক পরিচালিত স্কুলের শিক্ষক গাজী বোরহান উদ্দিন, রহমানিয়া জামে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদ সেক্রেটারি নুরুল আলম, গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের সহ প্রচার সম্পাদক মো. টিপু সুলতান, চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের অর্থ সম্পাদক তৌফিক আলম চৌধুরী, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আহসানুল হক প্রমুখ। মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রহমানিয়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ।
ভাষাসৈনিক আবুল কালাম আজাদ এডুকেশন সোসাইটির সভাপতি শাহজাহান আজাদ বলেন, কে এম শেহাবুদ্দীন প্রথম ক‚টনীতিক যিনি ১৯৭১’র ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আনুগত্য প্রকাশ করে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসের দিল্লি হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারির দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর দেখাদেখি অন্যান্য বাঙালি ক‚টনীতিকরাও উদ্বুদ্ধ হন। ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পক্ষে ক‚টনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন দেশে সফলতার সাথে ক‚টনীতিক ও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ১৯৯৬ হতে ২০০১ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অবসর নেন। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী তাঁকে জন্মস্থান মোহাম্মদপুর গ্রামে কাজীবাড়ি মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। ২০০৬ তাঁর লেখা আত্মজীবনী ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ইতিহাস গ্রন্থ There and Back Again A Diplomat’s Tale খ্যাতনামা প্রকাশনThe University Press Limited (UPL) থেকে প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৬ সালে তাঁকে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।
প্রধান অতিথি শামসুল আরেফীন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ক‚টনৈতিক ফ্রন্টে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকবাহিনীর পাশবিক গণহত্যার প্রতিবাদে, ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগের দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং প্রথম ক‚টনৈতিক মিশন খুলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ভাষাসৈনিক আবুল কালাম আজাদ এডুকেশন সোসাইটির উদ্যোগে কে এম শেহাবুদ্দীনের স্মরণে সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করায় গ্রস্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিক্ষক শাহজাহান আজাদকে তিনি ধন্যবাদ জানান। বিজ্ঞপ্তি