ভারতের সঙ্গে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ চুক্তির সমালোচক বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের দিনটিকে ‘শহীদ আবরার দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন মওদুদ আহমদ। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ প্রস্তাব করেন।
মওদুদ বলেন, ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের ব্যবহারে অনুমতি ও উপকূলে সার্বক্ষণিক নজরদারির বিষয়ে চুক্তি ‘আমাদের সার্বভৌমত্ব বিক্রির’ শামিল। ফেনীর নদীর পানি দেওয়া নিয়ে যে চুক্তি হল, তারপরেই হল ‘আবরারের শহিদানের’ ঘটনা।
তিনি বলেন, চুক্তি নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য রাখায় আবরারের প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতেই তাকে হত্যা করা হয়। তাই এ দিনটিকে ‘শহীদ আবরার দিবস হিসেবে’ পালন করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি’।
তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ওই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় করা মামলায় মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, ‘ফেনী নদী থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৫০ লিটার পানি যাবে, প্রতি চব্বিশ ঘণ্টায় যাবে ৪ লক্ষ লিটার। এই পানি আমাদেরই প্রয়োজন, শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। কিন্তু সেই পানি দিয়ে এসে বললেন, বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিক্রি করে আসেন নাই। অথচ, এই সরকার ১০ বছর হলো ক্ষমতায় আছে, কিন্তু তারা তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারে নাই’।
ছাত্রলীগ সারা দেশে ‘টর্চার সেল’ স্থাপন করে বিরোধী মতের মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ মানুষ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দেশে শান্তি ফিরে আসুক, নৈরাজ্য দূর হোক, আইনের শাসন ফিরে আসুক, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে আসুক এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে আসুক- এটাই বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা’। খবর বিডিনিউজের
কারাবন্দী দলীয় প্রধানের ক্ষেত্রে সরকার আইন প্রয়োগে বৈষম্য সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য দুই দিনের মধ্যে সম্রাট হাসপাতালে আর আমার নেত্রী খালেদা জিয়া, তিনবার জনগণের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, এখন পর্যন্ত উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না, তাকে অবহেলিতভাবে পিজি হাসপাতালের একটা ছোট্ট কেবিনে রাখা হয়েছে’।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। সংগঠনের পেশাজীবী নেতা সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক এম আবদুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাড. আবেদ রাজা, জাতীয়তাবাদী সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।