বাজারে সবজির দাম অস্বাভাবিক অনিয়মে চলা কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ জরুরি

25

শ্রাবণের শেষদিক এবং ভাদ্রের প্রথম সপ্তাহে কাঁচা বাজারে চলছে আগুনের তেজ। সবধরনের সবজির দাম বাড়তি। বৃষ্টি জনিত কারণে সবজির দাম কমারই কথা। অথচ কেন কি কারণে সবজির বাজারে আগুন ধরলো তা আমাদের বুঝে আসে না। বর্তমানে পার্বত্য জেলা সমূহে প্রচুর সবজির উৎপাদন রয়েছে। তাছাড়া দেশের অন্যান্য যেসব অঞ্চলে সবজি উৎপাদন হয় সে সব এলাকায় তেমন বন্যার খবরও আমরা পাইনি। করোনা মহামারীর কারণে পরিবহন ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যা থাকলেও বর্তমানে দেশের পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক। উৎপাদিত সবজি দেশের সকল এলাকায় বাজারজাত করা যাচ্ছে। বর্ষায় শাক-সবজির উৎপাদন বর্তমানে শীলকালীন উৎপাদনের চেয়ে কম বলে মেন হয় না। উৎপাদনকারীরা পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে কমদাম হলেও সবজি বিক্রি করে ঘরে ফিরে। কিন্তু বিশেষ করে শীতকালে উৎপাদিত সবজি আলু দেশে প্রচুর মজুদ থাকা সত্বেও কি কারণে ২০ টাকা দামের আলু ৪০ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে তা বুঝে আসার বিষয়ও নয়। বরবটি বর্ষাকালে বেশি উৎপাদিত হয়। তারপরও বরবটির দাম ১০০/৯০ টাকা ভাবা যায়! আমরা সবজির বাজার গরম হবার কোন সুনির্দিষ্ট কারণ দেখতে পাচ্ছিনা। সবধরনের সবজির দাম এখন দশ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করছে কাঁচাবাজারের দোকানিরা। টাকা থেকে ৫ টাকা অতিরিক্ত দামে কোন কোন সবজি দোকানিদের যে কোন সময় কোন কোন সবজি ক্রয় করতে হয়। কিন্তু বাজারে তারা ১ থেকে ৫ টাকা বাড়তি দামে কিনলে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা যায়।
সবজির চাহিদার কোন কম কিংবা বাড়তি নেই। বর্তমানে সর্বস্তরের মানুষ মাছ মাংসের চেয়ে সবজির প্রতি বেশি পরিমাণে আকৃষ্ট। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির বাজারে বিক্রেতাদের অমূলক বাড়তি দাম নেয়ার প্রবণতার উপর বাজার মনিটরিং কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে দেশের সবজির বাজার চলছে। কৃষকের উৎপাদন খরচ এবং পরিশ্রম খরচ অনুসারে কৃষকরা পাইকারি বাজারে সবজি বিক্রি করে। পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা এক্ষেত্রে একটা মধ্যসত্তভোগ করে থাকে। তারপরও খুচরা দোকানিরা কখনো কখনো সবজির অস্বাভাবিক বাড়তি দাম নিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে তাদের কোন নিয়ম কানুন মানতে দেখা যায় না। বাজারে সবজির দাম বিষয়েও কিছু আইন ও বিধিবিধান প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরোপ করা গেলে সবজির বাজারে একটা শৃঙ্খলা থাকতো। বর্তমানে কাঁচা বাজার তথা সবজির বাজারে কোন নিয়মকানুন নেই। আমরা এ বিষয়ে সরকারও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। সবজি একটি নিত্য প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য বস্তু। তার উপর সরকারি কিংবা প্রশাসনিক কোন নজরদারী অথবা বিধিবিধান আরোপ করতে কখনো দেখা যায়নি। যে কারণে কতটাকা ক্রয় করে দোকানিরা তাদের পরিবহন খরচসহ কত টাকায় বাজারে খুচরা দামে সবজি বিক্রি করবে এমন কোন বিধি ব্যবস্থা কাঁচা বাজারে দেখা যায় না। তাই অবস্থা ভেদে দোকানিরা ইচ্ছে মতো দাম নিয়ে সবজি বিক্রি করতে দেখা যায়। কাঁচা বাজারে এমন অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান জরুরি মনে করে সাধারণ ক্রেতারা।