নৌকা পরাধীন বাঙালির মুক্তির প্রতীক আবু বকর জীবন

21

১৯৫৪ সাল থেকেই নৌকা ছিল পরাধীন বাঙালির মুক্তির প্রতীক। যার সাথে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি। নৌকা বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে ইতিহাসবিদের কাছ থেকে জানা গেছে, নৌকা ছিল পূর্ববঙ্গের প্রতীক। বাংলায় নদীপথ ছাড়া চলাচলের উপায় ছিল না। নদীতে নৌকা মানেই পালতোলা নৌকা। নদী আর নৌকা নিয়েই গান চর্চা হতো পূর্ববঙ্গে। এই প্রতীকটা তাই ঐতিহ্যগত ভাবে এই অঞ্চলের মানুষের মননে গাঁথা হয়ে গেছে। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের নৌকা প্রতীক দিয়ে বাঙালির ভোটের সংগ্রাম শুরু হয়। যুক্তফ্রন্টের প্রার্থীরা ২২৩টি আসনে বিজয়ী হন। এর মধ্যে ১৪৩টি পেয়েছিল মাওলানা ভাসানির নেতৃত্বাধীন আওয়ামী মুসলিম লীগ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান গোপালগঞ্জ থেকে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতীকের প্রথম স্পর্শ। যুক্তফ্রন্ট ভেঙে গেলে নৌকা প্রতীক পায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু নৌকায় চড়ে নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগকে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ১৩ বছর। পাকিস্তানে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করে ১৬০টি আসনে জয়ী হয়। সেই থেকে নৌকা প্রতীক আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর সাথে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়। নৌকা হয়ে যায় শোষণের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বৈষম্যের পাহাড় অতিক্রম করার যন্ত্র, মুক্তিকামী মানুষের মন্ত্র, পরাধীন বাঙালির বাঁধভাঙা হাসি, অসাম্প্রদায়িক বাঙালির যোগসূত্র, স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাঙালি চেতনায় প্রতিষ্ঠিত সত্য আওয়ামী লীগ ও নৌকা একে অন্যের পরিপূরক। এতে পরিষ্কার হয়ে উঠে নৌকার বিপক্ষ মানে বঙ্গবন্ধু-বাঙালি-বাংলাদেশ অবমাননা।
প্রচার সম্পাদক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ