দুই কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

22

মাত্র দুই কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের অভাবে নিত্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে এ দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। এ এলাকার সিকদার পুকুড় পাড় থেকে নুইন্নার বাপের বাড়ি হয়ে দেওয়ানজি পাড়া হরি মন্দির পর্যন্ত সড়কটির ইট-বালি উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে বেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়ক জুড়ে তীব্র খানাখন্দের ফলে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন স্থানীয়রা। চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় এই সড়ক পথে অসুস্থ রোগী, কৃষক, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করছেন। সড়কের এই বেহাল চিত্র দীর্ঘদিনের পুরানো হলেও তা সংস্কারে উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। দ্রæত সড়কটি সংস্কার করে চলাচল উপযোগী করার দাবী এলাকাবাসীর। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির অধিকাংশ স্থানে দেবে গিয়েছে। এমনকি ইট-বালি উঠে গিয়ে সড়কজুড়ে বড় গর্তের সৃষ্ট হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি এলেই এসব গর্তে পানি আটকে গিয়ে ডোবায় পরিণত হয়। এতে এ সড়কে চলাচল করা যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে। বর্তমানে বেহাল এ সড়কে যানহাবন চলাচল তো দূরে থাক, পায়ে হেটে চলাও দুরহ হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে সোনারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্র্রসায় এ এলাকার শত শত শিক্ষার্থী তাদের প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করেন। এসময় বেহাল সড়কের কারণে তাদের নিত্য ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া এ এলাকার কৃষক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনা-নেওয়া করতে গিয়ে প্রায়শই নানা সমস্যার মুখে পড়ছেন। সোনারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তুহিন বলেন, রাস্তার বেহাল দশায় চলাচল করতে খুবই অসুবিধা হয়। বর্ষা আসলে তো কথায় নেই। কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। পরে আর স্কুলে যেতে পারিনা।স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, রাস্তায় গর্ত থাকায় মোটরসাইকেল চালাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তার সংস্কার করা প্রয়োজন। এ এলাকার কৃষক মো. শরীফ বলেন, সড়কটি ভাঙা হওয়ায় জমিতে প্রয়োজনীয় বীজ-সারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে কষ্ট হয়। অন্যদিকে উৎপাদিত ফসলাদিও সময়মত বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুল ইসলাম সেলিম বলেন, সড়কটি এ এলাকার জনগনের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে এ সড়ক দিয়ে। তবে সড়কটি করুণ দশায় যানচলাচলে বিঘন্ন ঘটে। এমনকি গর্ভবতী ও অসুস্থ রোগীদের নিয়েও খুবই সমস্যায় পড়ে এ এলাকার বসিন্দারা। অটোরিকশাচালক জমির উদ্দিন জানান, রাস্তায় গর্তের কারণে ঠিকমতো গাড়ি চালাতে পারি না। বর্ষা আসলে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হয়।সিএনজিচালক আবু ইউসুফ জানান, রাস্তায় ছোট-বড় গর্তের জন্য যাত্রীরা আরামে গাড়িতে বসতে পারে না। তারপরও বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়।দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি এ এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বেশ কয়েকবার রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এখন সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার দাবী জানিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার জানান, নিজেদের উদ্যোগে সড়কটি মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় রাস্তাটি আবারও ভেঙে যায়। রাস্তাটি মেরামতে তিনি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।