চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন বদলে দিতে পারে দেশের অর্থনীতি

23

চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর দেশের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দেশের জন্য গর্বের বিষয়। আসামের লুসাই পাহাড় হতে নেমে আসা কর্ণফুলী নদীর বঙ্গোপসাগর মোহনাসংশ্লিষ্ট এলাকায় গড়ে ওঠেছে দেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানা, জেলা শহর ও শিল্পাঞ্চল। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী শহর হলেও ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রাম দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাÐে অধিক পরিমাণ অবদান রাখছে। সে তুলনায় চট্টগ্রামে সরকারি উন্নয়ন কর্মকাÐ আশানুরূপ নয়। এ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর অন্তরে নানা ক্ষোভ ও দুঃখ রয়েছে। প্রাকৃতিক ভাবে চট্টগ্রাম একটি নান্দনিক মহানগরী। এখানে দীর্ঘদিন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকায় প্রধামন্ত্রীর সুদৃষ্টির কারণে বর্তমানে চট্টগ্রামে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। এ উন্নয়ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, শিল্পকারখানা এবং অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রকল্প হাতে নেন। যা বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে। তিনি চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণে দোহাজারি টু ঘুমধুম রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। খুব শিঘ্রই যার সুফর সমগ্র দেশের মানুষ ভোগ করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। যার সুফল ২০২৩ সালে মানুষ ভোগ করার অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমান সরকারের সহায়তায় বাঁশখালীতে গÐামারা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। সীতাকুÐের অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আনোয়ারা চায়না অর্থনৈতিক জোনের কাজও চলছে। বাঁশখালী সমুদ্র উপকূলে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনেতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজও শুরু হতে যাচ্ছে। এসবের মূল কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর।
বন্দরের সুবিধা লাভের আশায় বৃহত্তর চট্টগ্রামে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছে অর্থায়নের জন্য। এর মূল কারণ চট্টগ্রাম বন্দর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিকে বিশ্ববাজারে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাঁর সহায়তা ও আন্তরিকতায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বন্দরকে আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের সাফল্য দেশ পেয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর গত অর্থ বছরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং ও কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ে অতীতে সব রেকর্ড ভঙ্গ করতে সক্ষম হয়েছে, যা আমরা দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদন হতে বিস্তারিত জানতে পেরেছি।
বৈশ্বিক অতিমারি করোনা ভাইরাসের প্রচÐ ধাক্কা সামলিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দেশের রাজস্ব আয়ে বিশাল ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। আর কার্গো হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, আগের বছরের তুলনায় জাহাজ ভিড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এসব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায়। আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের যে পরিমাণ সক্ষমতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে তা এখনো পূর্ণমাত্রায় অর্জিত হচ্ছে না। চট্টগ্রাম বন্দরকে দেশের প্রধান অর্থনীতির চালিকা শক্তিতে রূপান্তরে সরকারিভাবে আরো উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। বঙ্গোপসাগর মোহনা হতে হালদা-কর্ণফুলীর মোহনা পর্যন্ত বন্দর সম্প্রসারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বন্দরকে আরো আধুনিকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে সম্প্রসারণ ও আরো আধুনিকায়ক করা কঠিন কোন বিষয় নয়। যিনি পদ্মা সেতুর মতো অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন তাঁর পক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন করে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার দ্রæত উন্মোচন করতে পারেন। বন্দর ও বৃহত্তর চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন আশা সমগ্র দেশবাসীর।