গণটিকায় বিশৃঙ্খলা কাম্য নয় সকল নাগরিকদের টিকার আওতায় আনতে হবে

10

 

গত ৭ আগস্ট দেশের তৃণমূল পর্যায়ে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উক্ত টিকাদান কার্যক্রমে চট্টগ্রামে ৩২৬ কেন্দ্রে গণটিকা নিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার জন নর-নারী। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের এহেন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এর ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে উদাসীন মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা খুবই ভালো উদ্যোগ। গ্রামের নিরক্ষর সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করেনা। তা ছাড়া তারা করোনায় আক্রান্ত হলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ধার ধারে না। যার ফলে ভেতরে ভেতরে এ জাতীয় মানুষের কারণে করোনা ভাইরাস অধিক পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিকল্পিত ভাবে সারাদেশের অসাবধান ও করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে উদাসীন জনতাকে গণটিকার আওতায় আনা গেলে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসতে বাধ্য। সরকারের গণটিকা কার্যক্রম একটি যুগান্তকারী ও করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকর পদক্ষেপ।
এ কর্মসূচি সারাদেশে পালনের মাধ্যমে দেশের জনগণকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনা গেলে দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ফলে দেশে ক্রমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং লকডাউনের কারণে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। অনলাইন শিক্ষার নামে শিক্ষা নিয়ে তামাশা জাতি আশা করেনা। গণটিকার আওতায় শিক্ষার্থীসহ দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের টিকা প্রদান করে যতদ্রæত দেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা যায় ততই দেশের মঙ্গল।
সরকার ইতোপূর্বে করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সবকয়টি ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে শেষ পর্যন্ত দেশে পূর্বের তুলনায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতেই দেখা গেছে। পূর্বের সরকারি নির্দেশনার কারণে দেশের অঢেল অর্থের অপচয় হতেও দেখা গেছে। যা আমরা বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। যেভাবেই হোক দেশের সব নাগরিকের টিকা দানের ব্যবস্থা করে দেশ হতে যেকোন ধরনের অচলাবস্থা তুলে দেয়াই দেশের জন্য মঙ্গল।
দৈনিক পূর্বদেশসহ পত্রিকান্তরে জানা যায় গত ৭ আগস্ট ২০২১ গণটিকা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দলীয় করণের খরব এসেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সরকার কোন দলের একার হয় না। সরকারের দায়িত্ব যারা পালন করে তাদের সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। বহু গণটিকা কেন্দ্রে দলীয় পরিচয়ে টিকিট বিলির খবর যেমন পত্রিকার প্রতিবেদনে এসেছে, একইভাবে ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, কমিশনারদের টিকার টিকিট বিলিতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগও পাওয়া গেছে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেই কাম্য নয়। প্রতিবন্ধি, বয়স্ক লোকদের অগ্রাধিকার প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে মানা হয়নি। এরপর গণটিকা কার্যক্রম শুরু করা গেছে, আশাকরি, এটি অব্যাহত থাকবে। আগামীতে গণটিকা প্রদানে যাবতীয় অনিয়ম, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি ইত্যাদি পরিহারে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা প্রদান করে তা কার্যকরের উদ্যোগ নিতে হবে। একাজটি সরকার তথা প্রশাসনকেই করতে হবে। টিকাপ্রদান কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার ও স্বাস্থ্যবিভাগের নির্দেশনা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হোক, এমন আশা দেশের মানুষের।