কৃষ্ণসাগরে রুশ হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মস্কভা ডুবে গেছে

22

পূর্বদেশ অনলাইন
কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার শক্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত রণতরী মস্কভা (মস্কো) ডুবে গেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, গত বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এই যুদ্ধ জাহাজ টেনে বন্দরে নেওয়ার সময় ডুবে গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার এই ফ্লাগশিপ জাহাজটিকে বন্দরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় বন্দরে নেওয়ার আগেই সেটি ডুবে গেছে। রাশিয়ার সামরিক শক্তির অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত ৫১০ ক্রুসহ মিসাইলবাহী রণতরী মস্কভা ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ নৌ বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলো। তবে কিয়েভের দাবি, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র রণতরীটিতে আঘাত করায় মস্কভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও কোনো হামলার কথা স্বীকার করেনি মস্কো। তারা শুধু বলছে আগুণ লাগার পর নৌযানটি ডুবে যায়। ২০১৪ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কভা পরিদর্শন করেন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগুনের কারণে জাহাজটিতে রাখা গোলাবারুদ বিস্ফোরিত হতে থাকে এবং এরপর সব ক্রুকে নামিয়ে আনা হয়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, টেনে বন্দরে নেওয়ার সময় জাহাজটি তার ভারসাম্য হারায়। এ সময় সাগর উত্তাল থাকায় সেটি ডুবে যায়। উল্লেখ্য, মস্কভা কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরের একটি ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ। ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ হচ্ছে কোনো নৌবহরের নেতৃত্বদানকারী জাহাজ, যা ওই বহরের অধিনায়ক ব্যবহার করেন।
নৌবহরের অন্যান্য জাহাজের তুলনায় ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ সাধারণত খুবই দ্রুতগামী এবং শক্তিশালী হয়। ক্রুজার মস্কভা ২০০০ সাল থেকে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ইউক্রেনের এক ডক ইয়ার্ডে তৈরি এ জাহাজটি ১৯৮৩ সালে কমিশনড লাভ করে।
সিরিয়া যুদ্ধের সময়ও রাশিয়া এই মস্কভা জাহাজটি সিরিয়ান সেনাদের নৌ সুরক্ষার কাজে ব্যবহার করেছে। এতে জাহাজ বিধ্বংসী মিসাইল এবং সাবমেরিন ও টর্পেডো বিধ্বংসী অস্ত্র ছিল।
মস্কভা জাহাজ নিয়ে আলোচনা ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে। সে সময় ইউক্রেনের ছোট্ট দ্বীপ স্নেক আইল্যান্ডে এই জাহাজ গিয়ে সেখানে মোতায়েন সব ইউক্রেনীয় সৈন্যকে আত্মসমর্পণের হুমকি দিয়েছিল। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের বাহিনীর ছোঁড়া দুটি নেপচুন মিসাইল মস্কভার ওপর আঘাত হেনেছে। তাদের এ দাবি যদি ঠিক হয় তাহলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় ১৩ হাজার (১২,৪৯০) টনের মস্কভাই হলো সবচেয়ে বড় রণতরী ডুবে যাওয়ার ঘটনা। এর আগে মার্চে রাশিয়া আরেকটি জাহাজ হারায় ইউক্রেনের হামলায়। এদিকে মস্কোভা ক্ষতিগ্রস্ত ও ডুবে যাওয়ার পর ইউক্রেনে হামলা আরও জোরদার করেছে রাশিয়া।