কৃষি চাষে সফল সানা উল্লাহ

7

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। এ প্রবাদের প্রমাণ দেখালেন মানিকছড়ির কৃষি উদ্যোক্তা মো. সানা উল্লাহ (৩৫)। উপজেলার মধ্যম তিনটহরীর প্রান্তিক কৃষক মো. সফিকুর রহমানের ৫ সন্তানের মধ্যে মো. সানা উল্লাহ জ্যৈষ্ঠ। এসএসসি পাসের পর ষাটোর্ধ্ব কৃষক পিতার সংসারের হাল ধরার স্বদিচ্ছায় এবং আধুনিকতার বদৌলতে মো. সানা উল্লাহ ধীরে ধীরে নিজেকে কৃষি পেশায় আঁকড়ে ধরে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। যা এখন জনপদে অনেকে তাকে অনুসরণ করে লাভবানও হচ্ছেন। সে এখন বারোমাসী কৃষক। তার ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবলে বর্গা জমিতেই শুরু করেন বারোমাসি ফসলের চাষাবাদ। এক, দেড় একর দ্বিতীয় শ্রেণির জমিতে বø্যাকবেরি তরমুজ, পটল, টমেটো, বেগুন, শিম, কাকরল চাষে বেশ সফলতার নজির দেখিয়েছেন এ তরুণ উদ্যোক্তা। এ বছর অসময়ে বারোমাসী তরমুজ চাষে ৩০ হাজার টাকার পুঁজিতে আয় করেছেন ৮০ হাজার টাকা। তার এ কর্মযজ্ঞে এলাকার বেশ কয়েকজন শ্রমিকের আত্মকর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩-৪ বছরের চাষাবাদে শতভাগ সফল। এ সফল তরুণ উদ্যোক্তা মো. সানা উল্লাহ বলেন, বাবার বড় সন্তান, এসএসসি পাসের পর বেশ কয়েক বছর তবলিগ জামাতে গিয়ে নিজেকে গড়ার চেষ্টা করেছি। গত ৩-৪ বছর ধরে সংসারে পিতার আয় রোজগারে সহায়ক হিসেবে ডিজিটালের ছোঁয়ায় গুগলে চার্জ করে কৃষি সম্পর্কে কিছু জানার সুযোগে এখন আমি একজন সফল ক্ষুদ্র কৃষক। নিজের সবজি চাষ উপযোগি জমি না থাকায় বর্গা হিসেবে এক, দেড় একর জমি নিয়ে তাতে সারা বছর (বারোমাসী) সবজি চাষে আমি সফল। যশোরের বিভিন্ন বীজ ভান্ডার থেকে উন্নতজাতের বীজ সংগ্রহ করে হাইব্রিড তরমুজ, টমেটো, পটল, শিম এর পাশাপাশি কাকরলসহ নানা জাতের সবজি, শাক, মুলা চাষে সারা বছর খেত-খামার ভরপুর থাকে। আর কর্মযজ্ঞে জড়িত থাকে ৩-৪ জন নিয়মিত শ্রমিক। এরা সারা বছর আমার কাজ করে। এরাই মূলত আমার শক্তি। এ বছর ৭-৮ শতক জমিতে হাইব্রিড তরমুজে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিক্রি হয়েছে ৮০ হাজার। এখন শিম গাছে ফুল আসছে, পটল খেতে টানা ২ বছর ফল ধরছে। এতে নিজের সাফল্যের পাশাপাশি এলাকার কিছু শ্রমিকের কর্মসংস্থান করতে পেরে নিজের কাছে ভালই লাগছে।
তিনি আরো জানান, স¤প্রতি ড্রাগন চাষের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সালাহ উদ্দিন কাউসার আফ্রাদ বলেন, একজন তরুণ উদ্যোক্তা ধারাবাহিক সাফল্যে এলাকায় বেকারত্ব দূরসহ অনেক কৃষক এখন তাকে অনূকরণ করছে। কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান বলেন, আমি আসলে এ উদ্যোক্তার বিষয়ে জানতাম না। এসব ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব কৃষি বিপ্লব। এখন থেকে আমরা এ রকম উদ্যোক্তাদের দৃষ্টান্ত সমাজে তুলে ধরে নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে কাজ করবো।