করোনার মধ্যেও ডেঙ্গুর হানা কার্যকর উদ্যোগ জরুরি

7

 

বৈশ্বিক অতিমারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুজনিত কারণে সারাদেশে লকডাউন, জন উৎকণ্ঠার মধ্যে ঢাকা মহানগরীসহ দেশে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া হানা দেয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি। পত্রিকান্তরে খবর বেরিয়েছে চট্টগ্রামে বিগত ২২ দিনে অর্ধশত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। সঠিক রিপোর্টিং হলে শনাক্তের এই হার আরো বেশি হতে পারে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ নগরীর সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর ভিড়ে ডেঙ্গু কিংবা চিকনগুনিয়াসহ মশাবাহিত রোগীর হিসাবের প্রতি হাসপাতালগুলো খুব একটা নজর না দিলেও চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে। চট্টগ্রামের সহযোগী এক দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে যা বিস্তারিত উঠে এসেছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ৩১জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় তা নিশ্চিত করতে দেখা যায়। তবে তাদের হিসাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনাক্তের হিসাব আসেনি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ২৬ জন ডেঙ্গুরোগী। বিগত জুলাই মাসে চট্টগ্রামে ৭ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্তের পাশাপাশি ২ জনের মৃত্যুর সংবাদ এসেছে পত্রিকায়। এমাসে রোগী শনাক্ত বেশি হলেও মৃত্যুর সংবাদ আসেনি। মৃত্যুর সংবাদ আসুক বা না আসুক মশাবাহিত রোগে চট্টগ্রামে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এদিকে চট্টগ্রাম বিআইটিআইডি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পৃথক ইউনিট খোলা হয়েছে। ইতোপূর্বে এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুজ্বরের বিস্তার রোধে সিটি কর্পোরেশনের জোরালো ভূমিকা দাবি করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কর্মসূচির দুর্বলতা সম্পর্কে স্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মেয়র মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়। যার ফলে চসিক মেয়র মশাবাহিত রোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন। ম্যালেরিয়া ডেঙ্গু চিকনগুনিয়া জ্বর সাধারণ জ্বর নয়, খুবই মারাত্মক জ্বর। এসব জ্বরে আক্রান্ত হলে জনস্বাস্থ্য খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। সুতরাং মশাবাহিত রোগ হতে মানুষকে বাঁচাতে চসিকের মশক নিধন কর্মসূচিকে বেগবান করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বিকার্য। সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনসাধারণের উচিত উল্লেখিত মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা। বাসাবাড়ির টব ও ছাদের টবে পানি জমতে না দেয়া। মশারি, স্প্রে এবং মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বর্ষাকালে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ বেশি ছড়ায়। তাই বর্তমান সময়ে জনগণের সচেতনতা এ রোগ হতে রক্ষা পাবার অন্যতম উপায়। আশার বিষয় হচ্ছে আগামী বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মশক নিধনে চসিকের পদক্ষেপ জানানোর তাগিদ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আমরা জানি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মশক নিধনে দায়সারা গোছের কার্যক্রম চালু রেখেছে। যা বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনে ইতোপূর্বে উঠে এসেছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মাধ্যমে মশক নিধন কর্মসূচি খুব একটা কার্যকর হবে বলে মনে হয় না। নগরির মশক নিধনে চসিকের আলাদা বিভাগ কার্যকর করা জরুরি। করোনার শক্ত ধকলের পর আবার চট্টগ্রামের জনগণকে যেন ডেঙ্গুর ভয়াল ছোঁবলে পড়তে না হয়, এব্যাপারে জনসচেতনতা এবং মশক নিধন কর্মসূচি জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি বলে নগরবাসীর অভিমত।