এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে জননিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি

10

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করছে। সিডিএ’র এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কাস্টম, বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগে গতিশীলতা আসবে। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা বলছে, চট্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট হতে বিমান বন্দর, পতেঙ্গা সৈকত, ইপিজেড আগ্রাবাদ, কাস্টম যেতে যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় ব্যয় হতো। দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে চট্টগ্রামের ব্যস্ততম এ রুটে। অনেক সময় বিদেশগামীরা বিমানের প্লাইট মিস করতেও দেখা গেছে। অনেক সময় ইমার্জেন্সি রোগীর মৃত্যু ঘটে যানজটে। এমতাবস্থায় টাইগারপাস হতে পতেঙ্গা বিমান বন্দর যাওয়ার সড়কের উপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ব্যয়বহুল এ প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় সিডিএ। নির্মাণ কাজ বর্তমানে ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় বর্তমানে ৩০ শতাংশ কাজ অবশিষ্ট আছে। এর অর্ধেক অংশ আগামী জানুয়ারিতে চালু হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজের অগ্রগতিও সন্তোষজনক। ঢাকার উত্তরায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গার্ডার দুর্ঘটনার পর আতঙ্ক বিরাজ করেছে চট্টগ্রামেও। যা নিয়ে দৈনিক পূর্বদেশ গুরুত্বসহকারে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন হতে জানা যায় ব্যস্ততম উক্ত সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ওড়িয়ে দেয়া যায় না। কেননা সরেজমিন প্রতিবেদন বলছে অনেক স্থানে নিরাপত্তা ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কোন কোন স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেক স্থানে ব্যরিকেট ছাড়াই গাড়ি ও জনগণের চলাচল দেখা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সাধ্যমত নিরাপত্তার ব্যবস্থার কথা বললেও মাঝেমধ্যে তাতে ঘাটতি আমাদের কাম্য নয়।
একথা আমাদের মনে আসে যে, ২০১২ সালে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজে ভয়াবহ গার্ডার দুর্ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সে স্মৃতি চট্টগ্রামবাসীকে এখনো নাড়া দেয়। সিডিএ কর্তৃপক্ষ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজে অধিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এ দাবি সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর।
সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে সিডিএ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি গাড়ি শ্রমিক এবং সাধারণ পথচারীদেরও সচেতন হতে হবে। বড় প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলে। তাই বলে শতটনের ও অধিক ওজনের গার্ডার উত্তোলনে কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্তে¡ও যে কোন সময় যান্ত্রিক ত্রæটি কিংবা যেকোন উপায়ে বিপদ আসতে পারে, এ কথা মাথায় রেখে রাস্তার গাড়ি চালক, গাড়িশ্রমিক এবং পথচারীদের ধৈর্য্যরে সাথে সতর্ক হয়ে নির্মাণাধিন সড়ক ব্যবহার করতে হবে। সব ক্ষেত্রে সতর্কতা ও সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। লালখান বাজার হতে পতেঙ্গা বিমান বন্দর পর্যন্ত এ সড়কের সাথে বহু লিংক সড়ক আছে। যেখানে কাজ চলছে সেখানে রাস্তা বন্ধরাখা খুবই প্রয়োজন। কাজ চলাকালীন স্থানকে এড়িয়ে যেতে গাড়ি ও পথচারীদের বিকল্প পথে চলা উচিত। বিপদের কোন হাত-পা নেই। যেকোন সময় যেকোন অনাহুত কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সম্পূর্ণ প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিডিএ এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িতরা জনগণের নিরাপত্তা বিষয়ে কোন রকম ঘাটতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে জনগণের আতঙ্ক দূর করতে হবে। এ বিষয়ে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিñিত করে সিডিএ কর্তৃক্ষ প্রকল্পের কাজ যত সম্ভব দ্রæত শেষ করুক এমন আশা সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর।
উল্লেখ্য যে, নির্মাণকারি প্রতিষ্ঠানকে অষ্টপ্রহর জননিরাপত্তার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের একথা স্মরণে রাখতে হবে যে, সিডিএ সার্বক্ষণিক সরাসরি প্রকল্পের কাজে পাহারা দিতে পারবে না। তা সিডিএ’র পক্ষে সম্ভবও নয়। তাই নির্মাণকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা চব্বিশ ঘণ্টা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ দেখভালে জননিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেবেন এমন আশা সাধারণ জনগণের।