বর্ষবরণ আয়োজনে বিধি-নিষেধ অসন্তোষ সংস্কৃতি কর্মীদের

22

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশাখ বরণের উৎসব পালিত হয়নি গেল দুইবছর। এবার করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকায় বর্ষবরণে জম্পেশ আয়োজনের আশায় বুক বেঁধেছিল সংস্কৃতিকর্মীরা। এলক্ষ্যে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত সংস্কৃতি কর্মীরা। কিন্তু গত সোমবার সংস্কৃতি কর্মীদের সাথে বৈঠকে দুপুর ২ টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে বলা হয়েছে। আর এই ধরণের সিদ্ধান্তে সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যদিও উভয় পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মতামত দিয়েছে পুলিশ। জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠকেও একই নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আয়োজকদের সাথে সোমবার বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছি। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি আছে। ঢাকার মতো কোনো নির্দেশনা আমাদের দিতে হয়নি। আয়োজকরাই বলে দিয়েছে দুপুর ১ টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করবে। আমরা সম্মত হয়েছি’। জানা যায়, আগামিকাল বৃহস্পতিবার নগরীর ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদ, সিআরবি শিরীষ তলায় নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদ চট্টগ্রাম, জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন এবং বাদশা মিয়া রোডের ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট বর্ষবরণের আয়োজন করেছে। ডিসি হিল প্রাঙ্গণে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের বর্ষবরণের আয়োজন শুরু হবে সকাল পৌনে ৭ টায়। এম এম আলী রোডে জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে।
বিকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠান করার পূর্ণপ্রস্তুতি নেয়ার পরেও আয়োজকরা অনুষ্ঠান সংক্ষীপ্ত করতে বাধ্য হয়েছেন। অনুষ্ঠান সংক্ষীপ্ত করার কারণে সকল সংগঠন ও অংশগ্রহণকারী এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে পরিবেশন করতে পারবেন না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুচরিত দাশ খোকন বলেন, পৌনে ৭ টায় আমাদের আয়োজন শুরু হবে। বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া হবে গান, নাচ, আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায়। এবার ৩২টি সংগঠন পারফর্ম করবে। টানা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলবে। এরপর নামাজের বিরতি দেয়া হবে। আমরা চাই দেড়টা থেকে দু’টার মধ্যে শেষ করতে। ঢাকাতেও এবারের আয়োজন বেলা ২ টার মধ্যে শেষ হবে’।
বর্ষবরণের আয়োজনে সময় বেঁধে দেয়ার বিষয়ে সম্মিলিত আবৃত্তির সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদ হাসান বলেন, ‘এবারই প্রথম নয়। এর আগেও নিরাপত্তার কথা বলে বিভিন্ন সময় বর্ষবরণের আয়োজনকে সীমিত করা হয়েছে। এগুলো সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার উপর একধরণের বাধা। সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পরবে। বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতির প্রধান সর্বজনীন উৎসব নববর্ষ। এভাবে এই আয়োজন সংকুচিত করা মানে সমাজকে পিছিয়ে দেওয়ার লক্ষণ’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার সব প্রস্তুতি বুধবারের মধ্যে শেষ হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় শোভাযাত্রা শুরু হবে। তবে এবারের বর্ষ বিদায় অনুষ্ঠানে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না।