চারদিন পর চট্টগ্রামে ফের টিকাদান শুরু

43

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটির তিনদিন এবং সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারসহ চারদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল শনিবার থেকে চট্টগ্রামে ফের শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের গণটিকাদান কার্যক্রম। এইদিন মোট টিকা নিয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৫ জন। এর মধ্যে নগরীতে যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানার প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৬ হাজার ৮৩৮ জন এবং ১৪ উপজেলার টিকা কেন্দ্রগুলোতে চীনের সিনোফার্মের প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৭ হাজার ৬৩১ জন, নগরীর ১৪ জন। এছাড়া একই সময়ে নগরীতে সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৮২ জন। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, শনিবার পর্যন্ত টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ৫ লাখ ৪২ হাজার ২৭৪ জন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ মোট ১১টি কেন্দ্রে মর্ডানার টিকা এবং ১৪ উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে সিনোফার্মের টিকা প্রদান কার্যক্রম চলছে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে যারা শনিবার টিকা নেয়ার ক্ষুদে বার্তা পেয়েছেন তারা নির্দিষ্টকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়েছেন।
এদিকে শনিবার নগরীর ১১টি টিকা কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কেন্দ্রে। এখানে মর্ডানার প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ৩৮৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮৩৩ জন এবং মহিলা ৫৫২ জন। একইভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে নারী ও পুরুষ মিলে মর্ডানার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ৮৭ জন। আর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ১ হাজার ১৪০ জন। এছাড়া নগরীর বাকি কেন্দ্রগুলোসহ মোট ১১টি কেন্দ্রে শনিবার মর্ডানার টিকা নিয়েছেন ৬ হাজার ৮৩৮ জন।
এই পর্যন্ত মোট ৪৮ হাজার ৩৫৯ জনকে চীনের সিনোফার্মের টিকা এবং ৪২ হাজার ৭২৬ জনকে মর্ডানার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টিকার জন্য সকালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে লাইন ধরে মানুষ। সময় বাড়ার সাথে সাথে মানুষের দীর্ঘ লাইনে ভিড় দেখা যায়। এখানে ৮টি কক্ষে আগে যারা নিবন্ধন করে টিকা পাননি, তাদের পাশাপাশি নতুন নিবন্ধনকারীদের টিকা প্রদান করা হয়।
জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. মো. আবদুর রব বলেন, জেনারেল হাসপাতালের টিকাদান কার্যক্রম চলছে। যারা এসএমএস নিয়ে এসেছেন তাদের সবাইকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। আজও টিকা নির্দিষ্ট সময়ে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলবে।
এদিকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছিল গত ৭ ফেব্রুয়ারি। টিকার উৎস ছিল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। ভারত গত মার্চে টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচি বিঘ্নিত হয়। গত ২৫ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ ছিল, যা চালু হয় চলতি মাস থেকে।
করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় টিকা নিতেও মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৫ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ।
এবার যাদের বয়স ৩০ বছরের অধিক তারা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারছেন। একই সাথে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য মোট ২৮টি ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬০ মানুষ। নির্দিষ্ট সময়ের পরে একই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩৩৫ মানুষ। পরবর্তীতে ভারত থেকে টিকা রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া সম্ভব হয়নি। টিকা পাওয়া সাপেক্ষে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।