পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী থ্যালিজ

630

পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী কে? এই ধরনের প্রশ্ন যদি কখনও কোন বিজ্ঞান মনস্ক মানুষকে করা হয় তবে তিনি নিঃসন্দেহে একটি নাম বলবেন। তিনি হচ্ছেন গ্রীক বিজ্ঞানী থ্যালিজ। খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৫ অব্দে জন্মগ্রহণ করে খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ অব্দে মারা যান তিনি। তাঁকে পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী কেন বলা হয় সেটা নিয়ে একটা কাহিনী প্রচলিত আছে।

খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৫ এর ২৪ মে একটা সূর্য গ্রহণ হয়েছিল। থ্যালিজ আগে থেকেই নির্ভুল হিসেব করে এ বিষয়ে অভিমত দিয়েছিলেন। নাগরিকদের জানিয়েছিলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই অন্ধকার কিছুক্ষণ পরই কেটে যাবে। ফুটে উঠবে আলো। সকল মানুষ অবাক হয়ে দেখল, তাই তো থ্যালিজের কথাই ঠিক।

এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে, এর আগে কি কাখনও সূর্য গ্রহণ হয়নি? হয়েছিল। তবে যখন হত, তখন চারদিকে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করতো। থ্যালিজ যা যা পূর্বাভাস করেছিলেন, মিলে গেল সব। বিজ্ঞান দিয়েই তার ব্যাখ্যা করলেন। এ জন্যেই মানুষ তাঁকে মেনে নিল পৃথিবীর প্রথম বিজ্ঞানী হিসাবে।

থ্যালিজ মিশরে বেশ কিছুদিন জ্যামিতি চর্চা করেছেন। এর সাহায্যে তিনি সুউচ্চ পিরামিডের উচ্চতা নিখুঁতভাবে মাপতে পারতেন।

মিশরের রাজা নিজে একবার থ্যালিজের এই দক্ষতা দেখার জন্য উপস্থিত ছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, এ কাজে তাঁকে জ্যামিতিক কোন গভীর জ্ঞান কাজে লাগাতে হয়নি। সূর্যের আলোতে একটা দÐ দাড় করিয়ে দিনের বিভিন্ন সময়ের ছায়ার দৈর্ঘ্য মেপেছেন।
যে সময়ে দন্ডের দৈর্ঘ্য ছায়ার দৈর্ঘ্য সমান হয়েছিল, সেই সময়টাতেই পিরামিডের ছায়ার দৈর্ঘ্য মেপে নেন। ফলে এটাই পিরামিডের উচ্চতা।

এই দৈর্ঘ্য মাপতে হলে জ্যামিতিক সমানুপাতিক নিয়ম মানতে হয়। নিশ্চয়ই এটা জানতেন থ্যালিজ। নইলে সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে জাহাজের দূরত্ব জানতেন তিনি কী করে? নিপুণভাবে এই কাজ করেছিলেন ইউক্লিড। কিন্ত সেটা থ্যালিজের ২৫০ বছর পরের ঘটনা।