অর্থবিত্তে মোহ নেই, মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করব

92

চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত শহর করার ঘোষণা দিয়ে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চসিক মেয়র নির্বাচিত হলে সমন্বিত উন্নয়ন করবো। আর এ উন্নয়ন একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। চট্টগ্রামের পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, নগর পরিকল্পনাবিদ, বিশেষজ্ঞসহ বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার পক্ষে থাকা সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে চট্টগ্রামের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনবো।
গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে। চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে রেজাউল করিম চৌধুরী প্রথম বন্দরনগরীতে আসলে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এ গণসংবর্ধনার আয়োজন করে। তবে এই অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন না। নাছিরের ঘনিষ্টজনরা জানান, মায়ের অসুস্থতার কারণে নগরীর একটি ক্লিনিকে থাকায় তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি। বক্তব্যকালে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আজম নাছিন উদ্দীনের নেতৃত্বে গড়ে তোলা নগরীর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবো। একইসাথে সকলকে সাথে নিয়েই একটি বাসযোগ্য এবং মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নগরী গড়তে কাজ করব। এই মেয়র নির্বাচনে আমাদের অনেক নেতা মনোনয়ন চেয়েছেন। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে সেই মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি শেখ হাসিনার প্রতিনিধি ছাড়া কিছুই নই।
তিনি আরো বলেন, ‘এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৭ বছর এই চসিকে দায়িত্ব পালন করেছেন। মাঝখানে পাঁচবছর বিএনপির প্রার্থী মেয়র ছিলেন। ২০১৫ সালে আবারও এই সিটি আমাদের হাতে এসেছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী-আ জ ম নাছির উদ্দীন যে জনবান্ধব নগর গড়ে তুলেছেন, আমি মেয়র নির্বাচতি হলে সেই ধারা অব্যাহত রাখব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত সময়ে চট্টগ্রামে রেকর্ড সংখ্যক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান ছালাম সাহেব যে উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করেছেন আমি তা এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
নগর আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও তার মর্যাদা রক্ষা করবো। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী, এমএ আজিজ, মহিউদ্দিন চৌধুরীর পথ অনুসরণ করবো। আমার অর্থের প্রতি কোন মোহ নাই। এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, মহিউদ্দিন চৌধুরী যে পথে গেছেন আমিও সে পথে যাবো।
রেজাউল করিম চৌধুরীর বলেন, নেতা হতে আসিনি, মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করে দেবো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে আপনাদের ভালোবাসায় আজ সিক্ত। আপনাদের ভালোবাসার কারণেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। চট্টগ্রামবাসীর খেদমত করতে মনোনয়ন দিয়েছেন।
সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই পুরাতন রেলস্টেশন চত্বর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সময় গড়ার সাথে সাথে পুরাতন স্টেশনের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। স্টেশনে সাজানো মঞ্চের সামনে আগত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। পুরাতন রেলস্টেশনের চতুর্দিক থেকে মিছিলে মিছিলে জনসমুদ্রে পরিণত হয় স্টেশন রোড়ের আশপাশের এলাকা। নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন, রেজাউল ভাইয়ের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম। প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানাতে কেউ ফুল, ফুল দিয়ে নৌকা, ফেস্টুন, ব্যানার ও দফায় দফায় স্লোগান দিয়ে জড়ো হচ্ছে একের পর এক মিছিল। তবে মঞ্চে এসেই ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে নেতাকর্মীদের অভিনন্দনের জবাব দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম।
নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ও তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক চন্দন ধরের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, নগর আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম। উপস্থিতি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান এমএ ছালাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।