মানুষ এখন আর ধোঁকায় পড়বে না : প্রধানমন্ত্রী

53

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য মুজিব বর্ষের উপহার। আমরা মুজিব বর্ষে দেশের জনগণের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে যেকোনো দেশে প্রবেশ এবং বহির্গমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের ঝামেলামুক্ত চলাচল নিশ্চিত হবে এবং ই-গেটের সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল বুধবার সকালে এ কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে প্রকল্প আমরা ই-পাসপোর্ট করার জন্য গ্রহণ করেছি, তার ফলে আমরা মনে করি বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। কারণ আমরা যে পাসপোর্টটা দিতে যাচ্ছি এটা বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। সেখানে একজন পাসপোর্ট যে গ্রহণ করবে তার ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের কর্নিয়া থাকবে। কাজেই সেখানে অতীতে যে একটা সমস্যা ছিল পাসপোর্ট নিয়ে.. যে একসময় গলাকাটা পাসপোর্টও প্রচলিত ছিল আমাদের দেশে, সেটা আর কখনও হবে না। এখন আর মানুষ ধোঁকায় পড়বে না। এখন স্বচ্ছতার সাথে চলবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১১৮টি দেশে ইতিমধ্যে এটা প্রবর্তন হয়ে গেছে। কাজেই বাংলাদেশ এখন হল ১১৯টি দেশ। আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশই ই-পাসপোর্ট চালু করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক। সে লক্ষ্যে যখনই যে প্রযুক্তি আসে আমরা সে পদক্ষেপ নেই। ২০১৫ সালে ২৪ শে নভেম্বর আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দিতে শুরু করি। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে আগামী ১০ বছরের জন্য আমরা এখন ই-পাসপোর্ট প্রদানের পদক্ষেপ নিয়েছি।
ই-পাসপোর্ট চালুর জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান সরকার প্রধান। খবর বিডিনিউজের
বিদেশগামী শ্রমিকদের যেন হয়রানিতে না পড়তে হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখার আহŸান জানান তিনি।
আমরা অর্থনৈতিকভাবে আজকে এগিয়ে গিয়েছি। আমাদের দেশের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। এখন অনেক মানুষ বিদেশে যায়। আমাদের প্রবাসীরা বিদেশে কাজ করে রেমিটেন্স পাঠায়। যে রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখে। আমাদের সব ধরনের কার্যক্রমে তাদের বিরাট সহায়তা আমরা পাই। কাজেই তারা যাতে কোনোরকম হয়রানির শিকার না হন, সেটাও যেন আমরা লক্ষ্য রাখি।
বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শুধু বর্তমানই নয়। ভবিষ্যৎ বংশধর.. ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, অর্থাৎ এই মুহূর্তে যে শিশুটির জন্ম হবে তার ভবিষ্যৎ জীবনটাও যেন সুন্দর হয়, নিরাপদ হয়, আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়, সেইভাবেই আমরা পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি।
যে বাংলাদেশ জাতির পিতা স্বাধীন করে দিয়েছেন এই স্বাধীনতা যেন অর্থবহ হয়। দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও জনগণের সমর্থনে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, তখন থেকে আমার লক্ষ্য ছিল.. ৭৫ এর পর থেকে আমরা চেয়েছি এই বাংলাদেশ জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। ব্যর্থ হতে আমরা দেব না। আমাদের দুই বোনেরই এটা একটা প্রতিজ্ঞা ছিল। শোককে বুকে নিয়ে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান, পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাকিল আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।