খাল উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী প্রথম দিনে ২৬ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে দখলমুক্ত রাজাখালী খাল

88

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অধীনে খাল উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত খালের পাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কল্পলোক আবাসিকের পাশে রাজাখালী খালে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিনের অভিযানে ২৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রাজাখালী খাল দখলমুক্ত করা হয়।
সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আহমেদ মাঈনুদ্দিন বলেন, বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও অবৈধ স্থাপনাগুলো সরোনো হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি। প্রথমদিন কল্পলোক আবাসিকের পাশে রাজাখালী খালে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। খালের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে খালটি দখলমুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নগরের ১৩টি খালের পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। অভিযান আগামী দুই মাস পর্যন্ত চলবে।
নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে ১৩টি খালের ওপর ১৫৭৬টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে উচ্ছেদে নেমেছে সিডিএ। অবৈধ দখলে থাকা এসব স্থাপনার মধ্যে সেমিপাকা ঘর থেকে শুরু করে বহুতল ভবনও রয়েছে।
সেনাবাহিনী ও সিডিএর যৌথ উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী।
সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, খালগুলোর ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সিডিএকে আমরা সহযোগিতা করছি।
প্রকল্পের কাজ শুরুর পর গত এপ্রিল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন খাল থেকে প্রায় পৌনে ২ কোটি ঘনফুট মাটি ও বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। গত বছর খালগুলো থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ঘনফুট এবং চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৪২ লাখ ঘনফুট মাটি উত্তোলন করা হয়েছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি খাল থেকে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রমও শুরু হয়। ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে নগরে ৩৬টি খাল খনন, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।