৯ নেতা থাকবেন নাকি নতুনে কপাল পুড়বে!

115

রাহুল দাশ নয়ন

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে আছেন চট্টগ্রামের সাত নেতা। রাঙামাটি ও কক্সবাজারের দুই নেতাও আছেন দুটি পদে। সবমিলিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৯ জন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছিলেন। আজ শনিবার সম্মেলন শেষে গঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে এই ৯ জনের মধ্যে কারা থাকছেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে নতুন কেউ ঠাঁই পেলে এই ৯ জনের কারো কপাল পুড়তে পারে। অন্যথায় পদোন্নতি হতে পারে বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতাদের।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, কমিটিতে কারা থাকবেন, কারা থাকবেন না তা শুধুই দলীয় সভানেত্রী জানেন। উনিই কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেন। তবে সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তার উপরও অনেককিছু নির্ভর করছে। এক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদের আবারও সাধারণ সম্পাদক থাকলে চট্টগ্রামের সাত নেতা বহাল থাকতে পারেন। নতুন কেউ কমিটিতে ঠাঁই পেলে রাঙামাটি ও কক্সবাজারের দুই নেতার একজন বাদ পড়তে পারেন। চট্টগ্রামের নেতাদের কেউ বাদ পড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাবে না।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার ছয় বছর পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এরপর থেকে গত ৪১ বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এবারও তিনি সভাপতি হতে পারেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের নাকি অন্য কেউ আসছে তা জানা যাবে আজ।
বর্তমান কমিটিতে চট্টগ্রামের নেতাদের মধ্যে প্রেসিডিয়ামে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, উপদেষ্টা মন্ডলীতে ড. অনুপম সেন, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও কক্সবাজারের নেতা এড. সিরাজুল মোস্তফা ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দিপংকর তালুকদার সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রাঙামাটির এই ৯ জন নেতার মধ্যে এবার কমিটিতে কারা থাকছেন তা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রামের নেতাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। চট্টগ্রামের নেতাদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবারও প্রেসিডিয়াম সদস্য হচ্ছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত। বর্তমান কমিটিতে তিনি সপ্তম প্রেসিডিয়াম সদস্য হলেও এবার তিনি আরও কয়েকধাপ উপরে উঠতে পারেন। উপদেষ্টা মন্ডলীর দুই সদস্যকে এবারও রাখা হলে তারাও পদোন্নতি পেতে পারেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ নতুন কমিটিতে পদোন্নতি পাচ্ছেন তা অনেকটা নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের তথ্যমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা এই নেতা এবার পদোন্নতি পেয়ে ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অথবা প্রেসিডিয়াম সদস্য হতে পারেন। ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া পদোন্নতি না হলে আবারও বর্তমান পদে বহাল থাকতে পারেন। আমিনুল ইসলাম উপ-প্রচার সম্পাদক থেকে পদোন্নতি পেয়ে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হতে পারেন। এই সাত নেতার মধ্যে কেউ পরিবর্তন হলে কিংবা পরিধি বাড়লে চট্টগ্রামের আরও কয়েকজন নেতার ভাগ্য খুলতে পারে। এক্ষেত্রে ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, হাটহাজারীর সালাহউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য সৈয়দ নুরুল ইসলাম কমিটিতে ঠাঁই পেতে পারেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর উপ-কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন সাকিব পূর্বদেশকে বলেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যারা আছেন তারা বহাল থাকতে পারেন এবং পদোন্নতির সম্ভাবনাও আছে। চট্টগ্রামের সাতজন নেতা বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রামের আরও নেতা ঠাঁই পেলে আমরা খুশি। যত বেশি নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকবে তত বেশি চট্টগ্রামের কথাই বলবেন। তবে কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ার একমাত্র দলীয় সভানেত্রীর। উনি যাকেই যোগ্য মনে করবেন কমিটিতে স্থান দিবেন।’