৬৭ শতাংশ মানুষ মারা যায় অসংক্রামণ রোগে

11

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রাণঘাতি তামাক পণ্যের ব্যবহার বন্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং নেতৃবৃন্দ। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে আয়োজিত ‘ট্যোবাকো কন্ট্রোল ’ল অ্যামেডমেন্ট ফর অ্যাচেভিং ট্যোবাকো ফ্রি বাংলাদেশ বাই-২০৪০’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ আহবান জানান। খবর বাসস।
তারা বলেন, প্রতিবছর দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ মানুষ অসংক্রামণ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে, যার অন্যতম কারণ তামাক ও তামাক পণ্যের ব্যবহার। তামাকের ব্যবহার বন্ধ ও জনসচেতনতায় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারলে এই আন্দোলন বহুমাত্রা পাবে।
বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য এবং জনসাধারণের কল্যাণে সংসদ সদস্যরা তামাকের ব্যবহার বন্ধে এগিয়ে এসেছেন। তারা নিজ নিজ এলাকায় তামাক বিরোধী প্রচারণা করেছেন। সরকারের কাছে এই বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি তামাকপণ্য সেবন করে। এখানে তামাকপণ্যের দাম সবচেয়ে কম। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে আছে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে মাত্র তিনশত টাকা জরিমানা হয়। আমাদের পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করা জরুরি। আমরা খেয়াল করেছি, বর্তমানে আইনে কিছু ব্যত্যয় রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়েছি। এটা বিশ্বের আর কোথাও হয়নি।’
তিনি জানান, এর আগে সংসদ সদস্যরা তামাকের পক্ষে চিঠি দিতেন। সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বিদ্যমান তামাক আইন পরিবর্তনের লক্ষ্যে ১৫২ জন সংসদ সদস্যকে চিঠি দিয়েছি। তামাকের কর বাড়ানোর সুপারিশ জানিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে ৮৬ জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়েছি। ৪০ জন সংসদ সদস্যকে নিয়ে কক্সবাজারে তামাক-বিরোধী কনফারেন্স করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে তামাক-বিরোধী সকল পক্ষের অনেকগুলো সুপারিশ প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও এটা আইন সংশোধনের প্রথম ধাপ। তবে আমরা আশাবাদী, খুব দ্রæতই আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো।
এর আগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, তামাকের এই ভয়াবহতা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণে গঠিত সংসদ সদস্যের এই সংগঠনটি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন নিয়ে কাজ করছে। এই ধরনের কাজে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যবৃন্দই সবচেয়ে এগিয়ে। ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগের সাথে সংসদ সদস্যবৃন্দ জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে পাশে থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো ফ্রি-কিডস বাংলাদেশ এর লিড পলিসি এডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম, রতœগর্ভা ফরিদা জামান স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরিদা জামানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।