৬০ বছর বয়সের পর পেনশন মন্ত্রীসভায় অনুমোদন

6

ঢাকা প্রতিনিধি
‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের পাশাপাশি, বিশেষ ব্যবস্থার অধীনে বয়স্ক ব্যক্তিরাও এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই পেনশনের সুবিধা পেতে পারেন।
তিনি বলেন, পেনশন স্কিমের আওতায় আসার জন্য, একজনকে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়াম দিতে হবে। ৬০ বছর পূর্ণ করার পরে সে ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন।
এখন আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে যাচাই-বাছাই শেষে আইনটি জাতীয় সংসদে পাঠানো হবে বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আর এতে অংশ নিতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। তারা (প্রবাসী) নিবন্ধিত হতে এবং প্রিমিয়াম প্রদান করতে পারবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনগণের বেকারত্ব, ব্যাধি, পঙ্গুত্ব, বার্ধক্য কারণে অভাবগ্রস্ততা এবং দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি পেনশন এবং সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে আইন উপস্থাপন করা হয়েছে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যদি কোনো বয়স্ক ব্যক্তি ৭৫ বছর বয়সের আগে মারা যান তবে নমিনি বাকি সময়ের জন্য পেনশন পাবেন, তিনি উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ৬২ বছর বয়সে কেউ মারা গেলে তার নমিনি ১৩ বছর পেনশন পাবেন।
তিনি আরো জানান, এছাড়া প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে গিয়ে কেউ মারা গেলেও তার বয়স ৬০ বছর না হলে সেই ব্যক্তির মনোনীত ব্যক্তি এককালীন সুবিধাসহ জমাকৃত অর্থ পাবেন।
উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তির বয়স ২০ বছর এবং তিনি এই পেনশনে অবদান রাখছেন। যদি তিনি ৩০ বছর বয়সে মারা যান তবে তার মনোনীত ব্যক্তি জমাকৃত অর্থ এবং এককালীন সুবিধা পাবেন। তবে প্রিমিয়ামের পরিমাণ প্রস্তাবিত আইনের অধীনে একটি নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ থাকবে এবং অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১৫ সদস্যের একটি গভর্নিং বডি থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে নির্ভরশীল মানুষের বর্তমান হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে ৫৮ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে। ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে সরকারি চাকরি করছেন মাত্র ১৪ লাখ মানুষ। এসব সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পেনশন সুবিধা রয়েছে। বাকি ১৮ থেকে ৫০ বছরের বেশির ভাগ মানুষ কৃষি, বেসরকারি খাত, ব্যবসায়ী কিংবা অন্যান্য পেশায় জড়িত রয়েছেন। এদের কোনও পেনশন সুবিধা নেই। এই বিপুল সংখ্যাক মানুষকে পেনশনের আওতায় আনতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত।