১৫ গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ

33

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

সাতকানিয়ায় শঙ্খ নদী থেকে বালু তোলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন গ্রামমবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল দশটার সময় উপজেলার চরতী ইউনিয়নের তুলাতলী-কেশুয়া গ্রামের মধ্যবর্তীস্থানে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত আবদুল মালেক (৫০), নুরুল হাসান (৫০), ফয়েজ আহমদ(৬২), আবু তাহের (৩৮), মোহাম্মদ কাওছার (২৬), রুহুল আমিন (৬০) ও মোহাম্মদ মানিককে (২০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দীন তালুকদার জানান, সাতকানিয়া উপজেলায় শঙ্খ নদীর বালু উত্তোলন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সাতজনকে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তারা ২৭ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডাক্তার রেজাউল করিম গুলিতে বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
হামলায় আহতদের দাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ চরতী ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর উপর্যুপরি গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রুহুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এমপি মহোদয়ের (সাংসদ প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী) প্রচেষ্টায় সরকার শঙ্খ নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য ড্রেজিং প্রকল্প শুরু করেন। বর্তমানে কেশুয়া এলাকায় ড্রেজিংয়ের জন্য শঙ্খের তীরে পাইপ ফিটিং করা হলে তুলাতুলি এলাকার শত শত লোকজন এসে বাধা দেয়ায় সংঘর্ষ হয়েছে। গ্রামবাসী নিজেদের গুলিতে নিজেরাই আহত হয়েছে।
সূত্র জানায়, সাতকানিয়ায় শঙ্খ নদীর ড্রেজিং প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কেশুয়া এলাকায় যন্ত্রপাতি স্থাপন করলে গতকাল সকাল ১০টার সময় গ্রামের বেশকিছু মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের বাধা প্রদান করে। আর এতেই দেখা দেয় বিপত্তি। মুহূর্তেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন গ্রামবাসীর ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন আহত হন।
গুলিতে গ্রামবাসী আহত হওয়ার ঘটনায় তাঁতী লীগের সাবেক নেতা রুহুল্লাহ চৌধুরীকে দায়ী করলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। আমি এ ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নই।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, চরতীতে মারামারি হয়েছে শুনেছি। পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষের কৃষি-ফসলি জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে অবৈধ বালু মহাল তৈরি ও জুলুমবাজীর প্রতিবাদ করায় নিরীহ কৃষক ও গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও জোর দাবি জানাচ্ছি।