১৪৪ ধারা : কোন পক্ষই সমাবেশ করতে পারেনি কাপ্তাইয়ে

2

কাপ্তাই প্রতিনিধি

কাপ্তাই উপজেলা সদরে রবিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কাপ্তাই উপজেলা শাখা ও কাপ্তাই উপজেলাধীন ওয়াগ্গা ইউনিয়ন ছাত্র লীগ ও উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ একই জায়গায় সমাবেশের ডাক দেওয়াকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত শনিবার রাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। শনিবার (২৭ আগস্ট) রাতে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান স্বাক্ষরিত এক গণ বিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এদিকে রবিবার সকাল থেকে কাপ্তাই উপজেলা সদরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোন নেতাকর্মী সমাবেশ করেনি। একইসাথে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও মাঠে দেখা যায়নি।
এসময় কাপ্তাই থানার ওসি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের উপজেলা সদরসহ
এর আশেপাশের এলাকায় সরব উপস্থিতি দেখা যায়।
ওসি গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি এবং ছাত্রলীগ একই স্থানে সমাবেশ আহবান করায় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হবার আশঙ্কা থাকায় জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি, শৃঙ্খলার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১৪৪ ধারা জারি করে। কেউ যদি আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, নাশকতা বা ফৌজদারি অপরাধ করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাপ্তাই উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও মুনতাসির জাহান সাংবাদিকদের জানান, রবিবার দু’টি বৃহত্তর দলের একই স্থানে একই সময়ে সমাবেশ ডাকায় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে এবং জনমনে আতঙ্ক দূর করতে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা মোতাবেক সকাল ৬ টা হতে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
এ ব্যাপারে সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি লোকমান আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মামুন জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি সদরে আজকের (রবিবার) বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে। এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছিলো। কিন্তু উক্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত, বানচাল ও নসাৎ করার হীন চক্রান্তের অংশ হিসেবে একই স্থানে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে। যার প্রেক্ষিতে
কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন বড়ইছড়ি সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করায় আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ কওে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম নুর উদ্দিন সুমন রবিবার সকালে উপজেলা সদরে গণমাধ্যমকে জানান, যেহেতু আগস্ট মাস, শোকের মাস। এমাসে মাসব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসাবে রবিবার উপজেলা সদরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে মূল হোতা তারেক জিয়ার ফাঁসির দাবিতে আমরা পূর্বেই বিক্ষোভ কর্মসূচীর ডাক দিয়েছি। কিন্তু একই জায়গায় একই দিনে বিএনপি সমাবেশ ডাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আজকের সমাবেশ করছিনা। এসময় কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন ফরহাদ ও ওয়াগ্গা ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সভাপতি জুবায়েদ হোসেন জাবেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে কাপ্তাই উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রবিবার সকালে সমাবেশের ডাক দেয়। অপরদিকে কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ একই দিন তারেক জিয়ার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করার ঘোষণা দেয়।