১৩৬ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দর ১৩৫ বছর পূর্ণ করে ১৩৬-এ পা রেখেছে। গতকাল সোমবার দিনটি নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে বন্দর ব্যবহারকারী সকল সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর আগে গত রোবাবার গণমাধ্যমের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভাও করেছেন। সেখানে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রগতি ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি ভবিষ্যতের উন্নয়ন নিয়ে নানাবিধ তথ্য তুলে ধরেন।
১৮৮৭ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করে ব্রিটিশ সরকার। ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল তা কার্যকর হয়। তখন থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর। এরপর থেকে প্রতি বছরের ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস উদযাপন করা হয়। এ উদযাপনকে ঘিরে থাকে মেজবান, আলোচনা, শোভাযাত্রাসহ বর্ণিল আয়োজন। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, আমাদের সুখবর হলো, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভিড়বে। এর ফলে বেশি পণ্য নিয়ে আরও বড় জাহাজ বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারবে। এতে জাহাজগুলোতে কন্টেইনারের সংখ্যাও বাড়বে। গতি বাড়বে পণ্য পরিবহনে। আর নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) নির্মাণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই মাসে পিসিটিতে কার্যক্রম শুরু হলে বছরে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এছাড়া মাতারবাড়ি টার্মিনাল ও বে-টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২১ সালে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউস, প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টন, প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৩ শতাংশ। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ২০৯টি, প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ। এ অর্জন বন্দরের ৩০ বছর মেয়াদি প্রক্ষেপণ ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে গতকাল সোমবার ‘চট্টগ্রাম বন্দর দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স¤প্রতি জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমাদের এ অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্য। বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সমুদ্রবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে আমি বন্দর কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি বলেন, উন্নত দেশ হয়ে ওঠার পথে এ যাত্রাকে আরও গতিশীল করতে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। ৪০ বিলিয়ন ডলারের এসব অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার পদ্মা সেতু নির্মাণ, দুই দশমিক ৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়িতে কয়লা চালিত বৃহদাকার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের আমদানির আয়তনও বেড়েছে বহুগুণে। আমদানিকৃত এসব পণ্য যথাযথ ব্যবস্থাপনায় গ্রহণ করা এবং সেগুলো যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে চট্টগ্রাম বন্দর।