হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল

18

সমালোচনার মুখে হাসপাতালগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহ বিষয়ে দেওয়া নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তাদের নতুন নির্দেশনায় হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে দর্শণার্থী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞার স্বাক্ষরে নতুন নির্দেশনাটি প্রকাশ করা হয়।
নতুন নির্দেশনায় দেখা গেছে, সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে গত ১২ জানুয়ারি দেওয়া নির্দেশনায় যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তা বাদ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞা স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছিল গবেষণা, জরিপ, অন্য কোনো তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্য বা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের ভেতরে রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের কোনো স্থিরচিত্র বা ভিডিওচিত্র ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
তবে এ নির্দেশনা জারির পর পর এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়, গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদও প্রকাশিত হয়। তারপরই মন্ত্রণালয় আজ তাদের আগের নির্দেশনা থেকে সরে আসে। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এ নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আগামিকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজনের ঘোষণা দেয়। তবে তার আগেই মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলো। সাংবাদিকদের প্রতি দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টস ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ আগামিকালের প্রতিবাদ সভা আপাতত বাতিল করা হলো বলে জানিয়েছেন।
বুধবার প্রকাশিতব্য সরকারি হাসপাতালে শীর্ষক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া সরকারের লক্ষ্য। নিরাপদ চিকিৎসার জন্য রোগীর সঙ্গে আসা দর্শণাথীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কেননা, তাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অজ্ঞতা এবং রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়ে জ্ঞানের অভাবে অধিকাংশ সময়ই কাক্সিক্ষত পরিবেশ বা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলো’।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক হাসপাতালে দর্শণার্থী পাস চালু করতে হবে এবং প্রতিটি পাসের জন্য নিরাপত্তা জামানত চালু করা যেতে পারে। রোগীর অসুস্থতা বিবেচনায় একজন রোগীকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ দুইজন দর্শণার্থীকে পাস দেওয়া যেতে পারে। হাসপাতাল ত্যাগের আগেই পাস ফেরত দিয়ে দর্শণার্থী নিরাপত্তা জামানত ফেরত নিতে পারবেন। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীরা বৈধ পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে বহন করবেন। আগত দর্শণার্থীদের জন্য পাস ইস্যু করার সময় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পরিদর্শনের কারণ ইত্যাদি তথ্য-সংবলিত রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি রোগী বা রোগীর সাহায্যকারীকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন জায়গায় রাখতে হবে।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনার পর সমালোচনা হয়, গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। তারপরই মন্ত্রণালয় তাদের আগের নির্দেশনা থেকে সরে আসে।