হাতির চলাচলের ১২ করিডোর উন্মুক্ত রাখার নির্দেশ

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এলিফ্যান্ট ওভারপাস এখন বাংলাদেশে, যেটির নিচে দিয়ে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে পারাপার হচ্ছে হাতি। গত বছরের শেষ দিকে চালু হওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে নির্মিত হয় এ এলিফ্যান্ট ওভারপাস। হাতি পারাপারে চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চুনতিতে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এ ওভারপাস চালু হয়েছে। এতে পাহাড়ের নিচে সুড়ঙ্গ দিয়ে চলছে ট্রেন আর উপরে পারাপার হচ্ছে হাতি। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে হাতির ১২টি করিডোরের সন্ধান পায়। বাংলাদেশে হাতি চলাচলের জন্য চিহ্নিত ১২টি করিডোরের মধ্যে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ৩টি, উত্তর বনবিভাগের ৫টি এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের ৪টি রয়েছে। আইইউসিএন বাংলাদেশে যে ১২ হাতির চলাচলের পথ (করিডোর) চিহ্নিত করেছিল সরকার সেই ১২টি করিডোর নির্দিষ্ট করে গেজেট প্রকাশের উদ্যোগ নেয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, হাতির আবাসস্থল ও পরিবেশ টেকসই রাখতে, তাদের খাদ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি চলাচলের করিডোর উন্মুক্ত রাখার প্রতি সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। সাংবিধানিকভাবেও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে।
দেশে হাতির আবাসস্থল মূলত পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া; কক্সবাজার জেলার ফাঁসিয়াখালী, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ বন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের গারো পাহাড়ে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, অর্থাৎ বৃহত্তর চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারের বনাঞ্চলগুলোতে স্থায়ী হাতির বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। অভিবাসী হাতিগুলো বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ভারত বা মিয়ানমারের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে আসে। এগুলোর বিচরণক্ষেত্র সিলেট ও মৌলভীবাজার, শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। এছাড়া রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বন বিভাগের কাসালং বন ও বান্দরবানের সাঙ্গুতেও রয়েছে এসব হাতির বিচরণ।
সরকার স্বীকৃত ১২টি করিডোরসহ অপরাপর করিডোরগুলোতে নির্বিঘেœ হাতি চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ বন্যপ্রাণীর বিলুপ্তি রোধকল্পে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সুষ্ঠু তদারকির মাধ্যমে এসব করিডোর অবৈধ দখলদার মুক্ত করতে হবে। বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী হাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি করিডোরগুলো রক্ষা করার জন্য সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে।