স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর বক্তব্যে মেয়র রেজাউল উদ্দীপ্ত?

50

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি মাসেই চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রী, সিটি মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে নিয়ে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে বৈঠক করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ওইদিন চট্টগ্রামের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলো সমন্বয় করতে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে মুখ্য ভূমিকা পালন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর সেবা সংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ডের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও কর্তব্য পালনে চসিককে সম্পৃক্ত করার বার্তা দিয়েছেন মেয়র। গতকাল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় এমন বক্তব্য দেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্দীপ্ত হয়েছে মেয়র। এমনটাই মনে করছেন নগর বিশ্লেষকেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) আন্দরকিল্লার পুরাতন নগর ভবনের কে.বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ৯ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীতে সরকারের যে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে সেগুলো যেন ঝুঁকি ও ঝামেলা মুক্ত থাকে, নাগরিক নিরাপত্তা বিঘ্ন ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এবং নির্বিঘ্নে কাজ সম্পাদন হতে পারে সেজন্য দেখভাল, তদারকি ও সমন্বয় সাধনের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও কর্তব্য পালনে চসিককে সম্পৃক্ত হতে হবে বলে জানান। তিনি বলেন, চসিকের কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত।
যে কোন কর্মকান্ডে জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতার বিষয়টি অন্যান্য সেবা সংস্থার তুলনায় চসিকেরই সবচেয়ে বেশি মন্তব্য করে মেয়র আরও বলেন, নগরীর চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবা সংস্থার বড় ধরনের যে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সে তুলনায় চসিকের সম্পৃক্ততা সামান্য। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রমের অনেক ক্ষেত্রেই নানা সমস্যা, ভোগান্তি এমনকি অনাকাক্সিক্ষত প্রাণহানি ঘটছে। এসবের দায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের হলেও সাধারণ মানুষের সমালোচনার তীর থাকে চসিকের দিকেই। কারণ চসিক কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত।
এতোদিন সেবা সংস্থার সমন্বয় নিয়ে মেয়রের বিচ্ছিন্ন বক্তব্য থাকলেও শক্ত অবস্থানের নজির মেলেনি। সাধারণ সভায় এমন বক্তব্যে নগর উন্নয়নের অভিভাবকত্বে মেয়রের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন নগরবাসী। মূলত নগরের উন্নয়নকে জনগণমুখী করতে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের সাথে সেবা সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাÐে সমন্বয় করতে হলে সিটি করপোরেশনকে শক্তিশালী করতে হবে। অন্যথায় বিচ্ছিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পিত শহর গড়তে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত গত ১৩ অক্টোবর বন্দর নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ড ও সেবা সংস্থার সমন্বয়ে সিটি মেয়রকে মুখ্য ভূমিকা পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ওই সময় চসিক মেয়র, চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে অনলাইনে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে সিটি কর্পোরেশনকে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হচ্ছে নগর পিতা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে শুধু জলাবদ্ধতা নয় যে কোন সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিদ্যমান যেসব প্রকল্প রয়েছে, সেগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো একে অপরকে দোষারোপ না করে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করার আহŸান জানান।