সীতাকুন্ডে বিষাক্ত বর্জ্য পুড়িয়ে বায়ুদূষণ

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন কল কারখানার পরিত্যক্ত বর্জ্য পুড়িয়ে তৈরি করা হয় জিংক এ্যাশ। এসব ছাই পোড়ানোর সময় ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেশিয়াম, পটাসিয়ামসহ বিভিন্ন রসায়নিক দ্রব্য উৎপন্ন হয়। যা ধোঁয়ার মাধ্যেমে বাতাসে মিশে যায়, যা মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ফলে উৎপন্ন এলাকার মানুষের মাঝে রাইনাইটিস এলার্জি, ফুসফুস আক্রান্তসহ নানা ধরনের শ^াসকষ্ট দেখা দেয়। ওই এলাকার প্রাণ বৈচিত্র্য উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। খোলাভাবে রাখা রাসায়নিক বর্জ্য নদী, নালা বা পুকুরে মিশে গেলে পানিতে থাকা বিভিন্ন জলজপ্রাণী অক্সিজেনের সংকটে পড়ে। সংবেদনশীল পণ্যটি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।
পরিবেশ দূষণ করে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে জিংক এ্যাশ উৎপাদন করায় গতকাল ‘অল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামক এক প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বক্তারপাড়া এলাকার এই কারখানাকে সীতাকুন্ড উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলাউদ্দিন এ জরিমানা করে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হাসান সজীব জানান, দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ দূষণ করে উন্মুক্তভাবে জিংক এ্যাশ তৈরি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। জিংক এ্যাশ তৈরির পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে ১৯৯৫ ( সংশোধিত ২০১০) এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা যায়, পরিবেশের ক্ষতি কমাতে বায়‚দ‚ষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যেমে বিভিন্ন কারখানা জিংক এ্যাশ তৈরি করে আসছিল। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (এপিসিএস) স্থাপনের মাধ্যমে কারখানার চুল্লি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া সংগ্রহ করে তা এক ধরণের ছাইয়ে রূপান্তর করা হয়। তবে এটি ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকে খোলাভাবে ছাই পুড়িয়ে জিংক তৈরি করে। উন্মুক্তভাবে বিষাক্ত বর্জ্য পুড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ আল আমিন বলেন, জিংক এ্যাশ বা দস্তা যা আঠার মত। খোলা জায়গায় উৎপাদন বা সংরক্ষণ খুবই বিপদজনক। বাতাসের সঙ্গে মিশে এসব এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাছাড়া এটি পানিতে মিশে না, পানির উপর একটা আবরণ তৈরি করে। ফলে পানিতে বাতাস মিশতে না পারায় অক্সিজেন তৈরি না। দীর্ঘদিন পানিতে আবরণ থাকলে অনেকসময় অক্সিজেন সংকটে মাছ, উদ্ভিদসমুহ মারা যায়।