সীতাকুন্ডে পথ হারিয়ে গহীন জঙ্গলে ব্যবসায়ী ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে উদ্ধার করল পুলিশ

11

সীতাকুন্ড উপজেলার পূর্ব রহমতনগর বারৈয়াঢালা বন বিভাগের ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় নবদম্পতি মুন্না ও রোকসানার। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে যান ব্যবসায়ী মো. মামুন চৌধুরী (৫০)। ডায়াবেটিস রোগী হওয়ায় খাবার খেয়ে বিকালে ফেরার পথে পাহাড়ের দিকে হাঁটতে শুরু করেন মামুন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে হাঁটতে হাঁটতে পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে ঢুকে পড়েন তিনি। একসময় হাঁটার পথও শেষ হয়ে যায়। সেসময় মোবাইলের নেটওয়ার্কও পাচ্ছিলেন না তিনি। অনেকটা নিরুপায় হয়ে উল্টো আসতে শুরু করেন। কিছুটা আসার পর মোবাইলে নেটওয়ার্ক পান। তখন বুদ্ধি খাটিয়ে জরুরি সেবা সংস্থা ৯৯৯ এ ফোন দেন। কিন্তু সংযোগ না পেয়ে ছেলে এবং মেয়েকে ফোন দেন। পরে মেয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে বিষয়টি অবগত করলে সীতাকুন্ড থানা পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় গভীর রাতে ফটিকছড়ি জেলার ভুজপুর থানা এলাকার পাহাড় থেকে তাকে উদ্ধার করে পুনরায় পাহাড়ি পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
উদ্ধারকাজে সহযোগিতাকারী স্থানীয় যুবকদের মধ্যে হারুন ও আরিফ বলেন, পুলিশের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর সন্ধ্যার দিকে আমরা প্রায় ১৫/২০ জন লোক একসাথে পাহাড়ের দিকে হাঁটা শুরু করি এবং উনার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত রাখি। গহীন পাহাড় হওয়ায় কিছু সময় মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলেও প্রায় সময় নেটওয়ার্ক চলে যেতো। সর্বশেষ হাঁটতে হাঁটতে ফটিকছড়ি ভুজপুর গহীন পাহাড় থেকে ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। শরীরে ডায়াবেটিস থাকায় পাহাড়ি এলাকায় হাঁটতে হাঁটতে পথ হারিয়ে ফেলেন তিনি। জরুরী সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দেয়ার কারণে তাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে মামুন চৌধুরী বলেন, বারৈয়াঢালা ফরেস্ট অফিসের পাশে একটি বিয়েতে যায়। বিয়ে শেষে পাহাড়ি এলাকায় হাঁটা শুরু করি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাঁটার পর পথ হারিয়ে একটি (কান্নাল) গহীন পাহাড়ে ঢুকে পড়ি। এরই মধ্যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। তখন মনের মধ্যে ভয় কাজ করে। হঠাৎ মাথায় আসে সরকারি জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেয়ার। কিন্তু নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলাম না। আবার আস্তে আস্তে কান্নাল থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করি। নেটওয়ার্ক পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই, কিন্তু সংযোগ পাচ্ছিলাম না। এরপর মেয়েকে ফোন দিয়ে বললাম ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিতে, আমিও স্থানীয় কয়েকজনকে ফোন দিলাম। গভীর রাতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। সরকারি সেবা সংস্থা ৯৯৯ নম্বরের কারণে আমি নতুন জীবন পেয়েছি।
এ বিষয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৯৯৯ এর তথ্যমতে আমরা পথ হারানো স্থানীয় ব্যবসায়ী মামুন চৌধুরীকে গভীর রাতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গহীন পাহাড় থেকে উদ্ধার করি। উদ্ধার হওয়া মামুন চৌধুরী বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের মহাসড়কে পূর্বপাশে রহমতনগর এলাকার কুমাদান বাড়ির মৃত মুকবুল আহমেদের তৃতীয় পুত্র ও বড় দারোগারহাট বাজারের ব্যবসায়ী।