লিবিয়ায় দালালচক্রের হাতে জিম্মি আনোয়ারার ৪ যুবক

7

আনোয়ারা প্রতিনিধি

উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া গিয়ে দালালচক্রের ফাঁদে আটকে গেছে আনোয়ারার ৪ যুবক। দালালের চাহিদামত টাকা দেওয়ার পরও যুবকদের লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে আরেকটি সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাদের নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাওয়া হচ্ছে মোটা অংকের মুক্তিপণ। জিম্মি যুবকরা হলেন রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. ওয়াসিম (২২), মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৯), আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২০)।
মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ পাঠানোর ঘটনা জিম্মি যুবকদের অভিভাবকরা গত বুধবার বিকেলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আনোয়ারা থানার ওসিকে জানিয়েছেন।
জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম লিবিয়ায় হাসপাতালে চাকরির কথা বলে গত ফেব্রুয়ারি মাসে জনপ্রতি ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে নেয়। ১৬ ফেব্রæয়ারি তারা লিবিয়া পৌঁছেন। তারা লিবিয়া পৌঁছার ৩/৪ দিন আগ থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হোয়াটঅ্যাপ, ইমোতে ফোন করে আরও টাকা চাওয়া হয়।
ভিকটিম চারজন লিবিয়া পৌঁছার পর জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাদের নির্যাতন করা শুরু করে দালালচক্র। নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়েছে পরিবারের কাছে। জিম্মি যুবকদের স্বজনরা জানান, জহিরুল যুবকদের ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। সেখানে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজান নামে এক লোকের হাতে দুলে দেন। মিজান তিনদিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেন। সাতদিন পর দুবাই থেকে মিশর হয়ে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে মিজান অন্য দালালের হাতে বিক্রি করে দেন চার যুবককে। লিবিয়ায় তাদের মাসখানেক কিছু কাজ দেওয়ার পর সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ তাদের বন্দী করে রাখে। গত ২৬ মার্চ পরিবার ও স্বজনদের কাছে কয়েকটি নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ও অডিও বার্তা পাঠায় দালালচক্ররা। ভিডিও বার্তায় জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং এসব টাকা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের চকরিয়া শাখার একটি হিসাব নম্বরও দেয়া হয়। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে এ চার যুবককেও জীবন দিতে হবে বলে বলা হয়। এজন্য বেঁধে দেওয়া হয় সময়ও। বুধবার বিকাল তিনটার মধ্যে যত টাকা পারে দিতে বলা হয়। না দিলে একজন-একজন করে লাশ পাঠানো হবে।
অপহৃত ওয়াসিমের মামা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, বুধবার তিনটার মধ্যে চারজনের জন্য চার লাখ টাকা পাঠাতে বলেছে। বিকাল থেকে মুঠোফোন ইমু ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার ফোন করছে টাকার জন্য। তাদের নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজও পাঠাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেছেন, স্বজনদের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।