রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় তবে সঠিক পন্থায়

19

ঢাকা প্রতিনিধি

সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সঠিক পন্থায় না হলে তারা আবারও ফেরত চলে আসবে। গতকাল বুধবার সকালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্ট্যাডিজের (বিআইআইএসএস) এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার বলেন, রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায়, তবে এটি হতে হবে স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ পরিবেশে। কিন্তু সত্য হচ্ছে সেখানে তাদের ফেরত যাওয়ার পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি। আমরা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে আসছি।রাজধানীর বিআইআইএসএস মিলনায়তনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনারের সঙ্গে ‘ইয়াং স্কলার মিট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মিশেল ব্যাচেলেট ও বিশেষ অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
অতীতে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল জানিয়ে মিশেল বলেন, করোনার কারণে এ প্রক্রিয়া বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ সংকটপূর্ণ। সেখানে বেশ অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, অনেক সশস্ত্র সংঘাত চলছে। মিয়ানমারে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আপনি যদি প্রত্যাবাসনের কথা চিন্তা করেন, তবে সেটি হতে হবে সঠিক পন্থায়। তা না হলে রোহিঙ্গারা আবারও ফেরত চলে আসবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএস’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান। সূচনা বক্তব্য দেন রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম। অনুষ্ঠানে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তরুণ শিক্ষক, গবেষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সফরের শেষ দিন গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিশেল ব্যাচলেট। পরে বিআইআইএসএস আয়োজিত আলোচনায় যোগ দেন। চার দিনের সফরে গত ১৪ আগস্ট সকালে ঢাকা পৌঁছান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং ৪ এক্সটেনশন ক্যাম্প পরিদর্শনে যান মিশেল ব্যাচলেট। কয়েকটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নারী, যুব প্রতিনিধি ও ধর্মীয় প্রতিনিধি ইমামদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারসহ মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হলে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানেই হবে। এ ব্যাপারে মিয়ানমারসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সঙ্গে ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।