রেলে অনিয়ম-কালোবাজারির কথা স্বীকার করলেন মন্ত্রী

25

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের অনুপস্থিতিতে সংসদে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রেলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও টিকেট কালোবাজারির কথা স্বীকার করলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এসব বন্ধের জন্য রেলে সুশাসন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য রুমিন ফারহানার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এ সময় নিজের গাড়িচালকের দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘টিকেট কাটতে গেলে টিকেট পাওয়া যায় না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ট্রেনে সিট খালি থাকছে’। মন্ত্রী বলেন, ‘রেলের অনিয়ম, দুর্নীতি, কালোবাজারে টিকেট কেনাবেচা বন্ধে সুশাসন দরকার। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে সব ধরনের অনিয়ম বন্ধ হবে’।
রেলওয়ের অব্যবহৃত ভূমি খাস খতিয়ানে এনে তা ভূমিহীনদের মাঝে বরাদ্দ দিতে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান মন্ত্রী। প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, ‘এটি একটি সুন্দর প্রস্তাব। আমি নিজেও এ বিষয়টি ভেবেছি। আমি এটা মন্ত্রিসভায় তুলব’। বিএনপির সাংসদকে উদ্দেশ্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আপনারা ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করলেন। এবারও নির্বাচনের পর সংসদে আসা নিয়ে অনেক কিছু দেখলাম। আপনারা সংসদে এসে এ ধরণের ভালো প্রস্তাব দিলে জাতিও উপকৃত হতো। আপনাদেরও জনপ্রিয়তা বাড়ত’।
জামালপুরের সাংসদ মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে রেলওয়ের ভূমি ছিল ৬০ হাজার ৪০৫ দশমিক ৮৫ একর। বর্তমানে ভূমির পরিমাণ ৬১ হাজার ৮২০ দশমিক ৩৫ একর। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ৬০ দশমিক ৫৭ একর ভূমি রেলওয়ের দখলে রয়েছে। ভূমি লিজ দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৫৯ কোটি ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯০ টাকা আয় হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও লিজ গ্রহণকারীর কাছে রেলের বকেয়া ১২৪ কোটি ৪৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৯৬ টাকা বলে জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের
সংরক্ষিত আসনের গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালে রেলে ৪৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতে ২১ জন নিহত এবং ১৪১ জন আহত হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের শামসুন নাহারের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫৯ জন নিহত এবং ৪৩৩ জন আহত হয়েছে।
১০ বছরে কাঁচা পাঁ রপ্তানি অর্ধেকে
গত ১০ বছরে কাঁচা পাঁ রপ্তানি কমে অর্ধেকে নেমেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৭ লাখ ৫০ হাজার বেল কাঁচা পাঁ রপ্তানি হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ৮ লাখ ২৫ হাজার বেল। সেই হিসাবে রপ্তানির পরিমাণ কমেছে ৯ লাখ ২৫ হাজার বেল। ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাঁ মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুপস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ তথ্য জানান।
নোয়াখালীর আরেক সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ জুটমিল কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) নিয়ন্ত্রিত পাঁকলগুলোর ৬৭৫ কোটি টাকার পাঁপণ্য অবিক্রিত রয়েছে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।