রাঙ্গুনিয়ার সেই ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হলো

14

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার দু’টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অভিযানে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় আলোচিত অবৈধ এবিসি নামক একটি ইটভাটাকে কোনো লাইসেন্স না থাকার দায়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং এক লক্ষাধিক ইট ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নে কেবিএম নামক অন্য একটি ইটভাটাকে এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় থেকে মাটি কাটার দায়ে ৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিক দত্ত এই অভিযান চালিয়েছেন। অভিযানে সহায়তা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম জেলা ও রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, নানা কারণে আলোচিত রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুরের এবিসি ইটভাটা সম্পূর্ণ অবৈধ ছিল। ওই ইটভাটায় অভিযানে এবিসি কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই আমরা সেটির চুল্লি, চিমনি গুঁড়িয়ে কাঁচা-পাকা প্রায় এক লাখ ইট মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি। একই দিন বিকালে উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের কেবিএম ইটভাটার মালিক মো. কামাল উদ্দীনকে পাহাড় থেকে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার দায়ে ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত।
উল্লেখ্য, উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের অবৈধ এবিসি ইটভাটায় গত ২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের স্টাফ করেসপনডেন্ট আবু আজাদ। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সাংবাদিক আবু আজাদ বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন (৪০), ইটভাটার ম্যানেজার কামরান (৩০) ও মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুরি (৩০)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরে এবিসি ইটভাটার ম্যানেজার কাঞ্চন কুমার তুরিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ একদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
আবু আজাদকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা স্বোচ্ছার সিপিজে (কমিটি ফর প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে আগামি ১ ফেব্রæয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।