রমজানকে উপলক্ষ করে ফলের দামও বেড়েছে বাজারে

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মহামারির শুরু থেকেই দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এর ধারাবাহিকতা এখনও কমেনি। আরও বাড়ছে দিনদিন। কয়েক মাস ধরেই নিত্যপণ্যের বাজার অপ্রতিরোধ্য। প্রতিবারের মতো রমজানের শুরুতে এবারও সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ফলের বাজারেও। রমজানে চাহিদা বেশি থাকায় ফলের বাজারেও মূল্যবৃদ্ধির খড়গ চলছে। এতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ২০ টাকা থেকে শুরু করে কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে কোনো কোনো ফলের দাম। ফলে বেশি দামের কারণে ফল কেনা থেকে বিরত থাকছেন অনেক ক্রেতা। আবার চাহিদার কারণে অনেকে বাড়তি দামেই কিনছেন। রোজায় ফলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম বলে দাবি করছেন পাইকারি ফল বিক্রেতারা। আবার খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়তদারদের কারণেই বাড়ছে ফলের দাম। তাদের দাবি, সিন্ডিকেটের জন্যই পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের বেশি দামে ফল কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেড়েছে বাজারে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি ও বিদেশি ফলের বেশ সমারোহ রয়েছে। এ মৌসুমে নগরীর বিভিন্ন আড়তে ফলের বিপুল যোগান দেখা গেছে। পেয়ারা, তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস ও ডাবসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি ফলে ভরপুর আড়তগুলো।
বিক্রেতারা বলছেন, রোজার শুরুতে ফলমূল বেশি কেনার তাড়া থাকলেও মাঝামাঝি সময়ে চাহিদা কমতে পারে। সেসময় অধিকাংশ ফলের দামও কিছুটা কমতে পারে। আর গরমের মৌসুমে ধীরে ধীরে ফলের যোগান বাড়ছে।
এদিকে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আপেল, আঙুর, মালটা, খেজুর, পেয়ারা, আনারস, তরমুজ, কলা পেঁপেসহ রোজায় যেসব ফল বেশি বিক্রি হয় তার প্রায় সবগুলোরই দাম বাড়তি। এর মধ্যে খেজুরের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। আজওয়া খেজুর আগে যে দামে বিক্রি হতো এখন তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে। হাব্বার খেজুর প্রতি কেজি এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার কালভী খেজুরের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা। রোজায় ইফতারের প্রধান ফল সব ধরনেরই খেজুরের দাম বেড়েছে। খেজুরের মতো বেড়েছে আপেলের দামও। প্রতি কেজি ফুজিয়া আপেলের দাম ১৮০ টাকা, যা কিছুদিন আগেও ছিল ১৬০-১৭০ টাকা। হানি আপেলের দাম ৩০-৪০ টাকা বেড়ে হয়েছে কেজি ১৫০-১৬০ টাকা। প্রতি কেজি আঙুর বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকায়। কমলার দাম যেখানে প্রতি কেজি আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা, সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১০-২২০ টাকা। মালটার দামও বেড়েছে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা। আনারের দামও বেড়েছে।
‘কৃষি বিপণন আইন-২০১৮’-তে বলা হয়েছে, ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ করা যাবে না। কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবে, সেভাবেই বিক্রি করতে হবে। কিন্তু ফলের বাজারে এ আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে।
ফলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কাজির দেউড়ি বাজার এলাকার মোরশেদ আলী জানান, গত এক সপ্তাহে আগের তুলনায় প্রায় সব ফলেরই দাম বেড়েছে। আগে এক কেজি কমলা বিক্রি করতাম ১৬০-১৭০ টাকা।
একই কথা বলেন খুচরা ফল বিক্রেতা আবদুল বারিক। তিনি বলেন, বর্তমানে এক কেজি আনারের দাম ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৪০ টাকা। এখন বেচাকেনাও তেমন নেই। দাম বাড়ছে সব ফলেরই। এছাড়াও দাম বেড়েছে কলা, আনারস, পেঁপে, বেলসহ সব ফলেরই।