যৌতুকের কাছে নিঃস্ব ভালোবাসা

69

সর্ম্পকে আপন খালাতো ভাই-বোন। উভয়ের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক ছিল প্রায় ৫ বছর। তারা হচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা থানার সেলবর্ষ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমানের মেয়ে জয়া চৌধুরী (১৮) ও একই এলাকার মো. আলাউদ্দিনের পুত্র জহিরুল ইসলাম (২২)। জহিরুল পেশায় একজন অটোরিক্শা চালক।
২০১৭ সালে তারা একই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ওই বছরের মার্চ মাসে ঘর থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। তবে বিয়ের কোন নিকাহ্নামা (কাবিন) হয়নি। শুধুমাত্র হুজুর আক্দ পড়ান। এভাবেই বিয়ে হয় তাদের।
নিকাহ্নামা না করার এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী জহিরুল। যখনই তাকে (জহিরুল) বিয়ের নিকাহ্নামা করার কথা বলা হয়, তখনই তিনি ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেন। জয়া তাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারপিট করা হয়।
জয়া চৌধুরী জানান, হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের মেডিকেল গেট এলাকার নূর মঞ্জিল সংলগ্ন আজিমের ভাড়া বাসায় তারা থাকেন। মাত্র দুই মাস আগে তারা বাসাটি ভাড়া নেন। এর আগে তারা চট্টগ্রাম শহরেও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে যৌতুক লোভী স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করছেন জয়া। সোমবার রাতে স্বামী তাকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনায় থানা পুলিশ পাষন্ড স্বামী জহিরুলকে আটক করে।
হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. হেলাল খাঁন জানান, গতকাল মঙ্গলবার জহিরুলকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
তিনি জানান, সেমাবার রাতে জহিরুল তার স্ত্রী জয়া চৌধুরীর শরীরে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় জয়ার চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ছুটে আসন। এরপর তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তার দুই হাত, পেট ও পিঠের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় স্বামী জহিরুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন জয়া চৌধুরী।
এদিকে মেয়ের এমন পরিণতির খবর পেয়ে জয়ার মা সৈয়দা সাকিনা সুনামগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম আসছেন বলে জানা গেছে।