যানজট কেন বেড়েছে জানালেন মন্ত্রী তাজুল

17

পূর্বদেশ ডেস্ক

মানুষের আয় ‘অনেক বেড়েছে’ বলেই ‘সবাই গাড়ি কিনছেন’ এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উপজেলা পর্যায়েও ট্রাফিক জ্যাম হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে রাজধানীর যানজট নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সমালোচনার জবাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। তাই সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি বেড়েছে। আওয়ামী লীগ যদি আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকে, তাহলে উপজেলাতেও গাড়ির লাইন লেগে যাবে। খবর বিডিনিউজের
সংসদে জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০২২ এর ওপর আলোচনায় হারুন বলেন, ঢাকা আজকে নিশ্চল নগরীতে পরিণত হয়েছে। টানা ১৫ বছর আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায়, কিন্তু ঢাকা শহরের একটা ভয়াবহ দুরাবস্থা।
জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, হারুন সাহেবকে বলি, আল্লাহ যদি বাঁচায় রাখে, আওয়ামী লীগ আরেকটা মেয়াদ ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আপনে দেখবেন যে, উপজেলায় ট্রাফিক জ্যাম হবে।
এর আগে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, শব্দ দূষণ বলেন, বায়ু দূষণ বলেন, পানি দূষণ বলেন, মশার উপদ্রবব বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাংঘাতিক বিপর্যয় বলেন এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ঢাকা শুধু নয়, গোটা বাংলাদেশ একটি অবাসযোগ্য দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।তাজুল ইসলাম বলেন, আপনি (হারুনুর রশিদ) বায়ু দূষণ ও শব্দ দূষণের কথা বলছেন। আমার ঢাকার মতিঝিলে অফিস ছিল। গুলশানে আসতাম, ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগত। এখন লাগে আমার অনেক বেশি সময়। কেন লাগে? কারণ আমাদের আয় অনেক বাড়ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশ থেকে ২ হাজার ৫৯১ ডলার মাথাপিছু ডলারের দেশ। এখন সবাই গাড়ি কিনছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য হারুন বলেন, সরকার শুধু মেগাপ্রকল্পের দিকে দৃষ্টিপাত করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা দেখতে পায় না, চোখে চশমা দিতে। আমরা চোখে চশমা দিচ্ছি। আজকে বাসা থেকে সচিবালয় যেতে তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। রোজাদাররা অফিস থেকে বাসায় এসে ইফতার করতে পারছেন না। মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গেলে মশার উপদ্রবে নামাজে বিঘিœত হচ্ছে। এগুলো বাস্তব চিত্র।
এই জায়গাগুলোতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের কথা বলছেন, এখানে মানুষ যেভাবে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে, সবাই ঢাকায় মুভ করছে। সারা পৃথিবীতেই এমন হয়েছে। লন্ডন, টোকিও, কলকাতায়ও হয়েছে। তারা এটাকে ম্যানেজ করেছে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাকে ড্যাপের সভাপতি বানিয়েছেন, সেখানে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করছি।
এর আগে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন বলেন, আমরা কিছু বললে, আপনারা বলেন বিএনপির আমলে কী হয়েছে? আরে বিএনপিতো ২০ বছর আগে ক্ষমতায় ছিল। আপনারা টানা ১৫ বছর ক্ষমতায়। আপনাদের পরিকল্পনা কী? আজকে ঢাকা নগরী যে বসবাসের অনুপুযুক্ত হয়ে গেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণে, আপনারা বিএনপির চেয়ে উন্নতি করছেন? না কি বিএনপির চেয়েও অবনতি ঘটেছে। এই জায়গাগুলো বলেন। যদি সুসংবাদ দিতে পারেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বাড়ার কারণে মাথাপিছু কজাম্পশান বাড়ছে, মাথাপিছু ওয়েস্ট বাড়ছে। ঢাকা শহরের ওয়েস্ট কালেকশন করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নিয়মিত রাস্তাগুলো পরিষ্কার করছে। সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এমনকি ইউনিয়নে ওয়েস্ট সংগ্রহ করার জন্য ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এসবের জাবাব দেওয়ার আগে মেট্রোরেল বাস্তবায়নে ঢাকা মহানগরীর যানজট দূর করা যাবে না দাবি করে ‘গণপরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিকায়নের’ পরামর্শ দেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।